রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে তিন শিক্ষার্থী অনশনে বসেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে তিন শিক্ষার্থী অনশনে বসেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে

ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনে তিন শিক্ষার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন তিন শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নিয়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন।

অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, ফোকলোর বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়া (শুভ) ও পপুলেশন সায়েন্স ও হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক মেহেদী মারুফ।

আল শাহরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন থেকে শুরু করে তাঁরা নানা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। এরপরও তাঁদের সন্তানদের কেন পোষ্য কোটার প্রয়োজন হবে? দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের সন্তানদের কোনো কোটা নেই। তাঁরা পোষ্য কোটা সংস্কার নয়, পুরোপুরি বাতিল চান।

ছাত্র অধিকার পরিষদের মেহেদী মারুফ বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল কোটার বিরুদ্ধে। দেড় হাজার ভাইবোন শহীদ হওয়ার পরও যদি কোটা বহাল থাকে, তাহলে কিসের আন্দোলন করেছেন তাঁরা? শিক্ষকদের কি এতই দৈন্যদশা যে তাঁদের সন্তানদের পোষ্য কোটা লাগবে। তাঁরা কি সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী?

আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে বৈষম্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা প্রাণ দিয়েছেন। তারপরও কেন বৈষম্য থাকবে? আন্দোলনের সময় যেসব শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন, প্রশাসনের দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁরা তাঁদের সঙ্গে নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত পোষ্য কোটা বাতিল না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। বিষয়টি আজ বিকেলে জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। দাবি মেনে না নিলে প্রশাসন ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। আজ সন্ধ্যায় ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ আলটিমেটাম দেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোষ্য কোটার প্রতি আমার কোনো দিন সমর্থন ছিল না, এখনো নেই। আমার চিন্তাভাবনা আগের মতোই আছে। পোষ্য কোটার বয়স ৪৭ বছর। বিশ্ববিদ্যালয় আমি একা চালাই না। এখানে দুই হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মকর্তা আছেন। এটি সংস্কারের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাঁদের মতামতও আমলে নিতে হয়। আমরা এবার এই জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যারা আন্দোলন করছেন, তাঁদের দাবি যৌক্তিক। বিষয়টি নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করব।’