গাজীপুর মহানগরের চক্রবর্তী এলাকার বেক্সিমকোর শ্রমিকেরা বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে। আজ শনিবার সকালে
গাজীপুর মহানগরের চক্রবর্তী এলাকার বেক্সিমকোর শ্রমিকেরা বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে। আজ শনিবার সকালে

বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বেক্সিমকোর শ্রমিকদের বিক্ষোভ

বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর মহানগরের চক্রবর্তী এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। আজ শনিবার সকালে বিক্ষোভ করে তাঁরা চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উভয় দিকে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।

কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকেরা প্রতি মাসেই আন্দোলন করে বেতন আদায় করছেন। চলতি মাসেও আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন–ভাতা পরিশোধ করা হলেও বেক্সিমকোর শ্রমিকেরা বেতন পাননি। বেতনের দাবিতে আজ সকাল থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক কারখানার ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কারখানা থেকে কিছুটা সামনে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।

শিল্প পুলিশ জানায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসের তাঁদের বেতনের পরিমাণ হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। প্রতি মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে তাঁদের বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় তাঁরা এখন বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না। এ কারণে তাঁরা গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন শুরু করেন। গতকাল শুক্রবার থাকায় তাঁরা আন্দোলন করেননি। আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে তাঁরা চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে আছেন। এতে উভয় দিকে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিকল্প পথে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

শ্রমিক মজিবুর রহমান বলেন, ‘তিন মাস ধরে আন্দোলন করে বেতন নিতে হচ্ছে। এভাবে হলে আমরা কাজ কীভাবে করব? আমাদের বেতন ঠিকমতো দিক, আমরা আন্দোলন করব না।’ নাজমা বেগম নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘ঘর ভাড়া দিতে পারতাছি না। ঘরে খাওন নাই। গ্রামের বাড়িতে মা অসুস্থ, তারে কিছু টাকা পাঠামু, হেইডা পাঠাইতে পারতাছি না। বাধ্য হইয়াই আন্দোলন করা লাগতাছে।’

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, ঘটনাস্থলে শিল্প পুলিশ ও সোনাবাহিনীর সদস্যরা আছেন। তাঁরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।