আলী আজগার ও আবদুর রহিম শাহ চৌধুরী
আলী আজগার ও আবদুর রহিম শাহ চৌধুরী

বন্দুকযুদ্ধের নামে ‘পরিকল্পিত হত্যা’র অভিযোগে চুয়াডাঙ্গায় সাবেক এমপি ও এসপির বিরুদ্ধে মামলা

ব্যবসায়ী মো. বিল্লাল হোসেনকে বাড়ি থেকে অপহরণ ও কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবননগর ও সদরের একাংশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আলী আজগার, সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুর রহিম শাহ চৌধুরীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।

মো. বিল্লাল হোসেনের বোন শালপোনা পারভীন গতকাল সোমবার আদালতে মামলাটি করেন।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিপন হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গার আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন এমপি আলী আজগারের ভাই দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী মুনছুর, দর্শনা পৌরসভার ১ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর জয়নুল আবেদীন, দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মো. আলীহিম, দামুড়হুদা মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দেবাশীষ, কনস্টেবল সাজিদুর রহমান এবং দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের মো. বিল্লাল হোসেনকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবি করেন আলী আজগর, জয়নাল আবেদীন, আলী মুনছুর ও আলীহিম। বিল্লাল হোসেন চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় এজাহারভুক্ত আসামিরা তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ১১ আগস্ট সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিল্লাল হোসেনকে তাঁর দক্ষিণ চাঁদপুরের বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। এরপর দক্ষিণ চাঁদপুরের উজলপুর রাস্তার হরচরার মাঠে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং একাধিক গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন বলে নাটক সাজানো হয়।

ঘটনার পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে মো. বিল্লাল হোসেনের বুকের বাঁ পাশে, বাঁ বগলের নিচে, ডান ঊরুসহ একাধিক স্থানে গুলির চিহ্ন দেখতে পান। এ ছাড়া পিঠে ও দুই হাঁটুর নিচে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা দাগ দেখা যায়। নিহত ব্যক্তির দুই হাত ছিল হাতকড়া দিয়ে বাঁধা ও ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখ ওপড়ানো ছিল।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ পারভেজ প্রথম আলোকে জানান, মো. বিল্লাল হোসেনকে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হত্যার পর নিহত ব্যক্তির পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে আসামিরা পরিবারের বাকি সদস্যদের অপহরণ, গুম ও খুনের হুমকি দেন। এ কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে।