ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় মুঠোফোন চুরির অপবাদ দিয়ে পাঁচ সন্তানের মায়ের (৩৫) শরীরে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান দুই ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইসহাক মোল্লা ও একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হোসেন মিয়া। ওই নারীকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল রাতে ওই নারী চারজনকে আসামি করে বিজয়নগর থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহার, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে একজনের মুঠোফোন চুরি হয়। ৮ জুলাই ওই নারীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মুঠোফোন চুরির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইউপি সদস্য ইসহাক একপর্যায়ে উপস্থিত একজনকে গরম পানি ও বড় গামছা আনতে বলেন। পরে ইউপি সদস্য ইসহাক গামছা দিয়ে ওই নারীর মুখ বাঁধেন। বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় লোকজন ওই নারীকে বেধড়ক মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ওই নারীর শরীরে গরম পানি ঢেলে দেন।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামের হারুনের স্ত্রী আমাকে তাঁদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। ইউপি সদস্য ইসহাক সবার সামনে আমাকে আপত্তিজনক কথাবার্তা বলেন। তাঁরা আমাকে মারধর শুরু করেন। আমার তিন বছরের ছেলে কোলে ছিল। তাকেও মারধর করেছে। একপর্যায়ে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে আমার সারা শরীরে গরম পানি ঢেলে দেন তাঁরা।’
ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘ঘটনা যখন হয়, তখন আমি ঢাকায় ছিলাম। পরে শুনেছি। চুরির অভিযোগে এমনভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। দুই পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চুরির অপবাদে ওই নারীকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। গরম পানি ঢেলে নির্যাতন ও মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই ইউপি সদস্যসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই নারী। সাবেক ও বর্তমান দুই ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।