সর্বশেষ সম্মেলনে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী সভাপতি, এমরান আহমদ চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক ও মো. শামীম আহমদ সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন গত বছরের ২৯ মার্চ হয়েছিল। ওই সম্মেলনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তিনজনকে নির্বাচন করা হয়েছিল কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে। প্রায় এক বছর হতে চললেও এখন পর্যন্ত দলটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। এতে পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তাঁরা দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
জেলার একাধিক নেতা জানান, নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ নানা দাবিতে বিএনপি একের পর এক আন্দোলন করছে। কিছুদিন পরপরই দলীয় কর্মসূচি করা হচ্ছে। অথচ সম্মেলনের এক বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হওয়ায় সাংগঠনিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তিন নেতার ওপর নির্ভর করে দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। জেলা সম্মেলনের পরপর নতুন কমিটি হবে—এ প্রত্যাশায় অনেক নেতারা উদ্যমী হয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। তবে এখন পর্যন্ত কমিটি গঠিত না হওয়ায় এ উৎসাহে অনেকটা ভাটা পড়েছে। অনেক নেতা দলীয় কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুটিয়েও নিয়েছেন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত না হওয়ায় নতুন করে নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে বিএনপি যে রকমভাবে কর্মসূচি দিচ্ছে, এ অবস্থায় দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের সম্পৃক্ত করে দ্রুত কমিটি গঠন করা উচিত ছিল। এত দিনেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা না হওয়ায় অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হলে সিলেটে সরকারবিরোধী আন্দোলন আরও বেগবান হবে বলে তিনি মনে করেন।
দলীয় কর্মীরা বলেন, সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে গত বছরের ২৯ মার্চ জেলা বিএনপির সম্মেলনে কাউন্সিলদের ভোটের মাধ্যমে তিন শীর্ষ পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর উদ্বোধন করেন। পরে বেলা দেড়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ হয়। কাউন্সিলে ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৮১৮ জন। এর মধ্যে ভোট পড়ে ১ হাজার ৭২৬টি। সম্মেলনে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী সভাপতি, এমরান আহমদ চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক ও মো. শামীম আহমদ সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তবে জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, গত জুন মাসে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট বিপর্যস্ত ছিল। এ সময়টাতে জেলা বিএনপির উদ্যোগে ও উপজেলা বিএনপির সহযোগিতায় জেলাজুড়ে ব্যাপকভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এরপর বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজনে জেলা বিএনপির নেতাদের ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। ফলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়ে সংগঠন মনোযোগ দিতে পারেনি।
জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বন্যা, বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজনসহ যৌক্তিক কিছু কারণেই এত দিন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। তবে চলতি সপ্তাহেই কেন্দ্র থেকে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু পদ হয়তো ফাঁকা থাকবে। তবে এসব পদও দ্রুতই পূরণ করা হবে।
তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হলেও বিএনপির জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা নতুন কমিটির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে সব ধরনের কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন জানিয়ে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় জেলা বিএনপি এখন অনেক বেশি শক্তিশালী।