সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বিকেল ৪টা ৫৩ মিনিটের দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
একই দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তখন বুধবার বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁরা।
আজ অবরোধ কর্মসূচির শুরুতে ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের গাড়িবহর আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে কেন্দ্রীয় গো প্রজননকেন্দ্রের (ডেইরি ফার্ম) মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্য চলে যান।
এর আগে বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংশপ্তক ভাস্কর্যের পাদদেশে থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। এটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো ২০১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে, দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দাবি, অন্যায্য কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে, যা বাংলাদেশের মেধাশূন্য করার চক্রান্ত। এটার বিপরীতে আমরা ছাত্রসমাজ দাঁড়িয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি না মেনে নেওয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মুন্না বলেন, কোটাব্যবস্থা থাকলে মেধাবীরা বৈষম্যের শিকার হন। কোটার কারণে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী যোগ্য থাকার পরও তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। ১০০ জনের মধ্যে ৫৬ জন যদি কোটায় চাকরি পান, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থান কোথায়? কীভাবে তাঁরা চাকরি পাবেন? অবিলম্বে এই কোটাব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।
আশুলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ অবরোধ চলাকালে সাংবাদিকদের বলেন, অবরোধের কারণে জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা ভেবে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।