ঘূর্ণিঝড় মোখা: সেন্ট মার্টিনে দমকা হাওয়া বেড়েছে

সেন্ট মার্টিনের পাশাপাশি টেকনাফ এলাকায়ও সকালে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে
ছবি: সৌরভ দাশ

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে দমকা হাওয়া বাড়তে শুরু করেছে। আজ রোববার সকালে দ্বীপটিতে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বইছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান সকাল ৭টায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘মধ্যরাত থেকে হালকা বাতাস ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। সকালে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে বৃষ্টিও বেড়েছে।’ তিনি জানান, ‘সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানিও বেড়েছে।’

এই ঝড়ের কারণে গতকাল শনিবার সেন্ট মার্টিনের যেসব বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছিলেন, তাঁরা এখনো সেখানে রয়েছেন বলে জানান মুজিবুর রহমান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

মধ্যরাতেই উপকূলে এই ঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব পড়তে শুরু করে। এর ফলে রাতেই কক্সবাজার শহর, সেন্ট মার্টিন, টেকনাফ ছাড়াও ভোলার মনপুরা, চরফ্যাশনসহ দ্বীপ ও চরাঞ্চলে হালকা বাতাস ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। সকালে টেকনাফ এলাকায়ও দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে বলে প্রথম আলোর প্রতিবেদকেরা জানিয়েছেন।

সেন্ট মার্টিনে আতঙ্ক

শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং এর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এই ঝড় নিয়ে উৎকণ্ঠার এক রাত পার করেছেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা। দ্বীপের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়া লোকজন আতঙ্কে সময় পার করছেন। সেন্ট মার্টিন হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া আলী আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দ্বীপের মানুষের ভাগ্যে কী আছে, আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারে না। শুধু আমি নই, আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা কেউ রাতে ঘুমাতে পারেননি। সবাই জেগে জেগে রাত পার করেছেন।’

চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ভোর পৌনে চারটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, দ্বীপের অধিকাংশ বাসিন্দাই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় অবস্থান নিয়েছেন। গতকাল বিকেল থেকেই বিভিন্ন এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুরা দল বেঁধে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ৩৭টি হোটেল, রিসোর্ট ও বহুতল ভবনে আশ্রয় নিতে শুরু করেন। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিরা বিপদ থেকে মুক্তির জন্য সারা রাত দোয়া প্রার্থনা করেছেন।