আবদুল কাদের মির্জা
আবদুল কাদের মির্জা

‘আমনেরা কেন্দ্রে যাইয়েন না, হিডাহুডা খাইয়েন না’

বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক ভোটারদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে না যেতে নির্দেশ দিয়েছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিজের পছন্দের চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যানের সমর্থনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি ওই নির্দেশ দেন। কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

সভা-সমাবেশ করে জামায়াত-বিএনপির সমর্থকদের কাদের মির্জার হুমকির ঘটনা নিয়ে কোম্পানীগঞ্জজুড়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। ভোটের আগে এমন হুমকির ঘটনায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ভীতি ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এ ধরনের হুমকির ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে।

আবদুল কাদের মির্জা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘জামাত-বিএনপির ভাইয়েরা, আমনেরা আওয়ামী লীগ মানেন না, সরকার মানেন না। নির্বাচন কমিশন মানেন না। আমনেরা ভোট মানেন না। আমনেরা কেন্দ্রেটেন্দ্রে যাইয়েন না। হিডাহুডা খাইয়েন না। ভোট ২৯ তারিখ শেষ অই যাইব, হিয়ার হরে চিহ্নিত করা অইব, যারা কেন্দ্রে যাই উল্টা ভোট মাইরব, তাদের চিহ্নিত করা অইব।’

মতবিনিময় সভায় কাদের মির্জার অনুসারী চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল (আনারস), দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন বাবর (চশমা) ও পারভীন মুরাদ (ফুটবল) উপস্থিত ছিলেন।

কাদের মির্জার এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, নির্বাচন সকলের জন্য। কোনো সুনির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য নির্বাচন নয়।’

গতকাল বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন আবদুল কাদের মির্জা

মিজানুর রহমান বলেন, কোম্পানীগঞ্জের ভোট নিয়ে কাদের মির্জা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভোটারদের হুমকি দিয়ে যে ধরনের বক্তব্য রাখছেন, সেটি সুস্পষ্টভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং ফৌজদারি অপরাধ। বিতর্কিত এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে এখন সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এরপরও যদি রিটার্নিং কর্মকর্তা কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন, তা খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, জামাত-বিএনপির ভোটারদের কেন্দ্রে না আসা নির্দেশনা দিয়ে কাদের মির্জার বক্তব্যের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এ বিষয়ে তাঁর কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।