রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করবে প্রশাসন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের কৃষ্ণ রায় নামের এক ছাত্রকে হল কক্ষে আটকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে চায় হল প্রশাসন। হলের প্রাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আজ বুধবার প্রথম আলোকে এ কথা বলেছেন।

প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তিনি একাডেমিক কাজে সিলেটে যাচ্ছেন। তবে তাঁরা ওই শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। আজকের দিনের মধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। আর তাঁরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেবেন।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন কৃষ্ণ রায়। অভিযোগে নির্যাতনের পাশাপাশি ওই শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। কৃষ্ণ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমানসহ ছাত্রলীগের সাত থেকে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এর আগে গত রোববার রাতে কৃষ্ণ রায়কে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নির্যাতন করেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে কৃষ্ণ রায় উল্লেখ করেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রদীপ কুমার পাণ্ডের সুপারিশে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৮৩ নম্বর কক্ষে আছি। গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের সাত থেকে আটজন অনুসারী আমার রুমে এসে আমাকে বের হয়ে যেতে হুমকি দেয়। আমি রাজি না হলে আমার বিছানা ফেলে দিয়ে আরেকজনকে তুলে দেয় তারা। এ সময় সোলাইমান নামে এক ছাত্রলীগ নেতা আমাকে মারধর করেন। এরপর আমাকে সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের রুমে নিয়ে মারধর ও মানসিক নির্যাতন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম বলেন, “তোকে মেরে শিবির বলে চালিয়ে দেব।” কিন্তু আমি হিন্দু জানার পর বলেন, “এখন তো তোকে মেরে ফেললেও কেউ কিছু করতে পারবে না।”’

তবে এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম নির্যাতন ও হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

কৃষ্ণ রায়ের বাড়ি নীলফামারী। তাঁর বাবা নেই। দুই বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। টানাটানির সংসারে মেসে থেকে তাঁর পড়াশোনা চালানো কঠিন ছিল। এ কারণে তিনি জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকের সুপারিশে হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে হলে উঠেছেন।

প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, একই অভিযোগ হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর দপ্তরে দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। যেহেতু ঘটনাটি হলের ভেতরের, তাই হল প্রশাসনই এটা তদন্ত করবে। তবে হল প্রশাসন এ ব্যাপারে সহযোগিতা চাইলে তাঁরা সেটা করবেন।

হলের প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কেউ কাউকে নির্যাতন করতে পারেন না। শিবির ট্যাগ দিয়েও মারতে পারেন না। এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে হল প্রশাসন দ্রুতই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।