বাড়ি থেকে লজ্জাবতী বানরশাবক উদ্ধার করে ছাড়া হলো বনে

জুড়ী উপজেলার কচুরগুল এলাকা থেকে উদ্ধার করা লজ্জাবতী বানরশাবকটি লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

গ্রামের ছোট বাজারে একটি মুদিদোকানের কাছে লজ্জাবতী বানরশাবক ঘোরাঘুরি করছিল। দোকানি সেটিকে পেয়ে ধরে বাড়িতে নিয়ে যান। খবর পেয়ে স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা শাবকটি উদ্ধার করে এনে বনে ছেড়ে দেন।

শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের কচুরগুল এলাকার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেওয়া হয় বানরশাবকটি।

বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বিকেলে লজ্জাবতী বানরশাবকটি কচুরগুল বাজারের মুদিদোকানি আশরাফুল ইসলামের দোকানের পাশে ঘোরাঘুরি করছিল। স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগিতায় এটিকে ধরে বাড়িতে নিয়ে রাখেন আশরাফুল। আজ বিকেলে স্থানীয় পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম ওই বাড়িতে গিয়ে বন্য প্রাণীটিকে নিয়ে আসেন।

পরে বন্য প্রাণী বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শে এটিকে স্থানীয় লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য লাঠিটিলা বনের ফরেস্ট ভিলেজারদের প্রধান আবদুর রাজ্জাক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

বন্য প্রাণী গবেষকেরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। বানরের এ প্রজাতি লাজুক বানর নামেও পরিচিত। ইংরেজিতে এটিকে বেঙ্গল স্লো লরিস বা নর্থান স্লো লরিস বলে। বৈজ্ঞানিক নাম Nycticebus bengalensis. এরা বাংলাদেশে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনের বাসিন্দা।

এ বানর নিশাচর। বনের গভীরে উঁচু গাছে থাকতে পছন্দ করে। দিনে গাছের খোঁড়লে বা ঘন পাতার আড়ালে ঘুমিয়ে কাটায়। ঘুমানোর সময় শরীরকে গোল বলের মতো করে রাখে। বিরল প্রজাতির, নিশাচর ও লাজুক হওয়ায় দিনে এদের সহজে চোখে পড়ে না। এগুলো গাছে গাছেই থাকে। সহজে মাটিতে নামে না। ধীরগতিতে চলাফেরা করে। এরা সাধারণত ফল, পাতা, উদ্ভিদের কষ বা নির্যাস ইত্যাদি খায়। মাঝেমধ্যে বড় কীটপতঙ্গ, পাখির ডিম-ছানা, সরীসৃপও খেয়ে থাকে।