অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী নাহিদ রসুলকে প্রত্যাহারের দাবিতে আজ সোমবার মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সচেতন নাগরিক ও সুশীল সমাজের ব্যানারে দুপুর ১২টা থেকে গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডের নাট্য সংস্থার সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন হয়।
এরপর মানববন্ধনকারী ব্যক্তিরা বেলা একটার দিকে গাইবান্ধা শহরের ব্যস্ততম ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে প্রতীকী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় উভয় পাশে যানবাহন চলাচল কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে। এই কর্মসূচিতে আইনজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গাইবান্ধায় যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল স্থানীয় সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। নানা প্রশাসনিক কাজে তাঁর কক্ষে দেখা করতে গেলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাঁর এপিএসের (সহকারী কমিশনার) কাছে স্লিপের মাধ্যমে সাক্ষাতের কারণ উল্লেখ করতে হয়। স্লিপ পাঠিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি পাওয়া যায় না। তিনি যোগদানের পর থেকে নিয়মিত গণশুনানি হচ্ছে না।
মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতারা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা করেন। এ ঘটনায় গত ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলকে বদলির দাবি জানিয়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন সংবাদ পোর্টালের ২১ জন সাংবাদিক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন জানান। একই দাবিতে ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিব বরাবর আইনজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের ৪২ প্রতিনিধি স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়। তাতে কোনো কাজ হয়নি।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা অবিলম্বে জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহারের দাবি জানান। না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সিদ্দিক আলম। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আমিনুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক জোট গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন, আইনজীবী সালাউদ্দিন কাশেম, মানবাধিকারকর্মী দিবা বেগম, সাংবাদিক সৈয়দ নুরুল আলম, শামীম আল সাম্য, কায়ছার প্লাবন, ওমর ফারুক, বিপ্লব ইসলাম প্রমুখ।