ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রীতি খন্দকার ওরফে হালিমা ৩২ ঘণ্টা ধরে নিখোঁজ বলে স্বজনেরা দাবি করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে প্রচারণায় গিয়ে তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। এ ঘটনায় আজ বুধবার সকালে প্রার্থীর স্বজনেরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
প্রীতি খন্দকার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাঁর প্রতীক পদ্মফুল। আজ সকালে প্রীতির স্বামী মাসুদ খন্দকার বিজয়নগর থানায় জিডি করেন। চতুর্থ ধাপে আগামী ৫ জুন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জিডি ও প্রার্থীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সার্ভারের ত্রুটির কারণে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারায় প্রথমে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষিত হন প্রীতি খন্দকার। পরে উচ্চ আদালত থেকে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান। প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে তিনি দিনরাত প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল দুপুরে দুই নারী সহযোগীকে নিয়ে উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নে প্রচারণায় যান। হরষপুরের ঋষিপাড়ায় ঢুকে প্রচারণা চালানোর সময় দুই নারী বাইরে আসেন। তখন ভোটারদের সঙ্গে গ্রামের ভেতরে কথা বলছিলেন প্রীতি। ১০ থেকে ২০ মিনিট পার হলেও যখন প্রীতি বের হয়ে আসছিলেন না, তখন ওই দুই নারী ভেতরে যান। কিন্তু তাঁরা প্রীতিকে কোথাও খুঁজে পাননি।
স্বজনেরা জানান, অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করেও প্রীতিকে না পেয়ে ওই নারী বাড়িতে চলে আসেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও প্রীতির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তখন প্রীতির স্বামী বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানান এবং আজ সকালে থানায় জিডি করেন।
প্রীতির স্বামী মাসুদ খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বেলা পৌনে দুইটার দিকে প্রচারণার সময় নিখোঁজ হন। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও আজ রাত ৯টা পর্যন্ত স্ত্রীর কোনো সন্ধান পাননি। ৩২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনো কেউ কোনো খোঁজ দিতে পারেননি। প্রতিপক্ষের লোকজন ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর স্ত্রীকে গুম করেছেন বলে অভিযোগ করেন।
বিজয়নগর থানার ওসি আসাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হরষপুরের খেয়াঘাট এলাকায় তিন সহকর্মীকে নিয়ে ওই প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। সেটিও দিনের বেলা শত শত মানুষের মধ্যে। সেখান থেকে নাকি ওই প্রার্থী নিখোঁজ হয়েছেন। কীভাবে কী হয়েছে, বুঝতে পারছেন না। ওই প্রার্থীর স্বামী থানায় একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিজয়নগরের ইউএনও সৈয়দ মাহাবুবুল হক বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। স্থানীয় লোকজনের কেউ কেউ বলছেন, যাঁদের নিয়ে ওই প্রার্থী প্রচারণায় গিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে সেখান থেকে ফিরে গেছেন। সম্ভাব্য অনেক কিছুই হতে পারে। ওই প্রার্থী মানুষের সমবেদনা পেতে নিজ থেকেও নিখোঁজ থাকতে পারেন বলে পুলিশ সন্দেহ করছে। কারণ, তাঁর ব্যক্তিগত নম্বর স্বামীর কাছে আছে। সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।