চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাবেক যুবলীগ নেতা খাইরুল আলম হত্যা মামলার প্রধান আসামি পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোখলেসুর রহমান আজ রোববার সন্ধ্যায় জামিনে মুক্ত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক শরিফুল ইসলাম।
গত বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ থেকে তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়। জামিনের কাগজ চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পৌঁছালে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেসবাউল হক তাঁর সহযোগীদের নিয়ে গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে জেলা শহরের উদয়ন মোড়ের কাছে ইফতারসামগ্রী কিনতে আসা খাইরুল আলমের ওপর হামলা চালায়। এ সময় কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় খাইরুল আলমের ভাই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২২ এপ্রিল সদর থানায় মোখলেসুর রহমানকে ১ নম্বর আসামি করে ৫০ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। ২৬ এপ্রিল মেসবাউল হকসহ পাঁচজনকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মেসবাউল হক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে মেসবাউল বলেন, হামলার আগে মেয়র মোখলেসুর রহমানের সঙ্গে তাঁদের একাধিকবার বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় খাইরুল আলমকে পঙ্গু করে দিতে হবে। হামলার পর তিনি মেয়রকে ফোন করে বিষয়টি জানান। তখন মেয়র তাঁকে বলেন, ঠিক আছে। চিন্তার কোনো কারণ নেই। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি দেখবেন। আপাতত যেন দূরে কোথাও চলে যান তিনি (মেসবাউল)।
জেলা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নাজমুল আজম জানান, উচ্চ আদালতের আদেশে মামলার ১ নম্বর আসামি মোখলেসুর রহমানসহ ৩৪ জন আসামি ৪ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। চার সপ্তাহ শেষে জেলা দায়রা জজ আদালতে তাঁদের আত্মসমর্পণের আদেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ৩০ মে ৩২ জন আসামি আত্মসমর্পণ করলেও মোখলেসুর রহমান করেননি। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি ৬ জুন জেলা দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে মোখলেসুর রহমান কারাগারে ছিলেন।