গাজীপুরের টঙ্গীতে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ইজতেমা মাঠের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিয়েছেন কিছু মুসল্লি। তাঁদের দাবি, তাঁরা মালামাল পাহারা দিতে মাঠে এসেছেন।
পুলিশ গতকাল বুধবার গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইজতেমা মাঠে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ করে। গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইজতেমার মাঠ ও আশপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একসঙ্গে ঘোরাফেরা বা জমায়েত হতে পারবেন না। এ নির্দেশনার মধ্যেই মাঠের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিয়েছেন মুসল্লিরা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ইজতেমা মাঠসংলগ্ন কামারপাড়া-মুন্নুগেট সড়ক ও মাঠের বিভিন্ন ফটকে অবস্থান করছেন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। ইজতেমা মাঠের টিনশেড মসজিদ ও এর আশপাশে অবস্থান করছেন কিছু মুসল্লি। কেউ কেউ বাঁশ হাতে পাহারা দিচ্ছিলেন মাঠের বিভিন্ন ফটক।
মাঠে থাকা মুসল্লিরা বলেন, তাঁরা সবাই মাওলানা জোবায়ের অনুসারী। মাওলানা সাদ অনুসারীরা মাঠ খালি করে দেওয়ার পর গতকাল রাতের বিভিন্ন সময় তাঁরা ইজতেমা মাঠে এসেছেন। তাঁদের কেউ ঢাকা, কেউ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাবলিগ জামাতের সাথি। তাঁদের দাবি, তাঁরা বড়দের নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠে এসেছেন, মাঠের বিভিন্ন মালামাল পাহারা দিচ্ছেন।
তাঁদের একজন মো. আবদুর রহমান। তিনি এসেছেন টাঙ্গাইল থেকে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বর্তমানে বিভিন্ন জামাতের মোট ৫০০ সাথি মাঠে অবস্থান করছি। আমরা মাঠের জিম্মাদার। বড়দের নির্দেশনা অনুযায়ী মালামাল পাহারা দিতে গতকাল রাতে মাঠে প্রবেশ করেছি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল শুক্রবার থেকে ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনের জোড় পালন করতে চেয়েছিলেন মাওলানা সাদের অনুসারী মুসল্লিরা। কিন্তু মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা তাঁদের মাঠে জোড় পালন করতে দেবেন না বলে জানান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরে মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের টঙ্গী জোনের উপকমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই পক্ষের সভা শেষে মাঠে থাকা মালামাল পাহারা দেওয়ার জন্য জোবায়ের অনুসারীদের ৫০০ লোক থাকার সিদ্ধান্ত হয়। তাঁরা সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাঠে অবস্থান করছেন। তবে পুলিশের নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে। মাঠ ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আছেন। বহিরাগত কাউকে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
তবে মাওলানা সাদ অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. সায়েম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইজতেমা মাঠ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা, যা প্রশাসনের লোকজনের করার কথা। কিন্তু এর মধ্যেই সরকার তাঁদের (জোবায়েরপন্থী) মাঠ বুঝিয়ে দিয়েছে। পাহারার নামে ঠিকই তাঁরা মাঠে অবস্থান করছেন। এটা বৈষম্য।’