প্রদীপ রায়
প্রদীপ রায়

দিরাই উপজেলা

প্রদীপ রায়ের সম্পদ ও মামলা দুটিই বেড়েছে

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চার ধাপের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে সুনামগঞ্জের দিরাই ও মৌলভীবাজারের জুড়ীর দুই প্রার্থীর হলফনামা ধরে প্রতিবেদন।

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা প্রদীপ রায়ের গত পাঁচ বছরে আয় ও সম্পদের পাশাপাশি মামলার সংখ্যাও বেড়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, দ্রুত বিচারসহ দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় পাঁচটি মামলা রয়েছে।

নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রদীপ রায় দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২০১৯ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে একই পদে নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু মাত্র ৬২ ভোটের ব্যবধানে তখন পরাজিত হন।

প্রদীপ রায়ের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি তিনটি মামলার তথ্য দিয়েছিলেন। এসব মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন বলে তখন উল্লেখ করেন। এবারের হলফনামায় তিনি পাঁচটি মামলার কথা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে একটি হত্যা, একটি দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলা রয়েছে। উপজেলার একটি হাওরের জলমহাল নিয়ে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার মামলায় প্রদীপ রায়কে আসামি করা হয়। তিনি ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন।

পেশায় ব্যবসায়ী প্রদীপ রায়ের পাঁচ বছর আগে বছরে আয় ছিল ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এবার তিনি ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছেন সাত লাখ টাকার বেশি। পাঁচ বছর আগে তাঁর অস্থাবর সম্পদ ছিল নগদ, ব্যাংকে জমা, দুটি মোটরসাইকেল, একটি কার, ইলেকট্রনিক ও আসবাবসামগ্রী মিলে ৮ লাখ ১২ হাজার ১০০ টাকার। এবার তাঁর অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ২৩১ টাকা।

দিরাই উপজেলায় প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন। প্রদীপ রায় ছাড়া অন্যরা হলেন দিরাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মো. আজাদুল ইসলাম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও দিরাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিপা সিনহা, দিরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক (প্রার্থী হওয়ার পর বহিষ্কার) ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. গোলাপ মিয়া।

আইনজীবী রিপা সিনহার পেশা, সঞ্চয়পত্র ও সম্মানী বাবদ বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৮০০ টাকা। তাঁর স্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ও অন্যান্য খাতে দেখানো হয়েছে ২৮ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদ হিসেবে কৃষি ও অকৃষিজমির মূল্য ৬ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা। রিপা সিনহার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

আজাদুল ইসলাম তাঁর আইন পেশা ও ব্যবসা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার।

যুবলীগ নেতা রঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচারসহ দুটি মামলা রয়েছে। তিনি ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তাঁর ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। স্থাবর সম্পদ যৌথ মালিকানায়।

মো. গোলাপ মিয়ার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা রয়েছে। তিনি ব্যবসা থেকে বছরে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আয় করেন। তাঁর অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পদের হিসাবে কৃষি ও অকৃষিজমি রয়েছে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার।