ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে দুই দিনের বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় কোথাও গোড়ালি, আবার কোথাও হাঁটুপানি জমেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী।
শহরের লোকজনের ভাষ্য, ঈদের দিন সন্ধ্যায় বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিনভর মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। গতকাল ও আজ এই দুই দিনের বৃষ্টির কারণে শহরের প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে শহরের নালা ও জলাশয় ভরাট হয়ে এমন জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ১২টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ৯০ থেকে ১০০ টন বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে পলিথিন ও প্লাস্টিকের বর্জ্য থাকে ৫ থেকে ১০ টন। শহরের টেংকের পাড়ের ভাগাড়সহ বিভিন্ন এলাকার মোড় থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শহরের ছয়বাড়িয়া এলাকায় নিয়ে ফেলেন। এ ছাড়া গৃহস্থালির কয়েক টন বর্জ্য বিচ্ছিন্নভাবে নালা-খালে ফেলা হচ্ছে। এ কারণে শহরের প্রবহমান খাল (টাউন খাল) ভাগাড়ে পরিণত হয় এবং অধিকাংশ নালা ভরাট হয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোট নালার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার টেকসই। অন্যগুলোর অবস্থা ভালো নয়। তা ছাড়া নালাগুলো অনেক পুরোনো। প্রয়োজনের তুলনায় টেকসই নালার সংখ্যা কম। শহরের বহুতল ভবনের সংখ্যা বেড়েছে। যে কারণে বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফেলা ময়লায় নালাগুলো ভরে গেছে। এ জন্য সামান্য বৃষ্টিতে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে জমে থাকা পানি সরতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।’
গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, বৃষ্টিতে শহরের টিএরোড, কুমারশীল মোড়, টেংকের পাড়, হালদারপাড়া, অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মোড়, জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকা, উত্তর মৌড়াইল ও দক্ষিণ মৌড়াইল এলাকায় হাঁটুপানি জমেছে। রাস্তায় পড়ে থাকা কোরবানির পশুর রক্ত ও বর্জ্য বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে গেছে। এতে ঈদে বাড়িফেরা লোকজনসহ সব শ্রেণির মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
শহরের কলেজপাড়ার মোস্তাক আহমেদ, উত্তর মৌড়াইলের শামীম আহমেদ, হালদারপাড়ার লিটন বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানালেন, শহরের প্রতিটি নালা ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর। যে কারণে সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমে। গতকাল দিনভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। উত্তর মৌড়াইলে পুকুর ও কবরস্থান-সংলগ্ন সড়কে হাঁটুর ওপর পর্যন্ত পানি জমেছে। ঈদের এ সময়ে সবাইকে এই নোংরা পানির ওপর দিয়েই চলাফেরা করতে হয়েছে। এটি নোংরা শহরে পরিণত হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবীর বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ঈদের ছুটিতে ছিলেন। এ জন্য শহরবাসীর দুর্ভোগ একটু বেশি হয়েছে। আজ পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজে যোগ দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। শিগগিরই শহরবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে।