খুলনার কয়রা সদরে গতকাল উপজেলা চেয়ারম্যান মহসিন রেজার বাসভবনে আগুন দেওয়া হয়
খুলনার কয়রা সদরে গতকাল উপজেলা চেয়ারম্যান মহসিন রেজার বাসভবনে আগুন দেওয়া হয়

কয়রায় নিজ বাড়ি থেকে উপ‌জেলা চেয়ারম্যানের পোড়া মর‌দেহ উদ্ধার

খুলনার কয়রায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম মোহসিন রেজার বাসভবনে ঢুকে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে ওই বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে পুড়ে যায় মৃতদেহটি।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কয়রা সদরের ওই বাসভবন থেকে মোহসিন রেজার পোড়া মর‌দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বজনেরা।

নিহত মোহসিন রেজার চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, ‘গতকাল বিকেল চারটার দিকে আমরা খবর পাই, মোহসিন ভাইকে মেরে তাঁর বাসায় আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে ওই সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন থাকায় আমরা সেখানে যেতে পারিনি। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাসভবন থেকে তাঁর লাশ কয়রার গোবিন্দপুর গ্রামের পৈতৃক বাড়িতে আনা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে দাফন করা হবে।’

সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় আমরা যখন মোহসিন ভাইয়ের বাড়িতে পৌঁছাই, তখনো ভেতরে আগুন জ্বলছিল। ঘরের বারান্দায় পড়েছিল তাঁর লাশ। কোনো রকমে পানি দিয়ে আগুনের তাপ কমিয়ে মরদেহ বের করে এনেছি। দোতলা বাসভবনের অনেকাংশ পুড়ে গেছে।’  

জি এম মোহসিন রেজা

মোহসিন রেজার ছোট ভাই জেলা পরিষদের সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বড় ভাইয়ের লাশ পেয়েছি। আজ বেলা ১১টায় গোবিন্দপুর গ্রামের পৈতৃক বাড়িতে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হবে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়রার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসে বিজয়োল্লাস শুরু করেন। বেলা তিনটার দিকে আনন্দমিছিল থেকে ভাঙচুর চালানো হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে। আগুন দেওয়া হয় খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামানের কয়রা সদরের বাসভবনে।

পরে কয়রা সদরে অবস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজার বাসায় আন্দোলনকারীরা যান। তখন বাসার ভেতর থেকে গুলি ছোড়া হয়। এতে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিক্ষুব্ধ লোকজন আরও সংগঠিত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজার বাসায় হামলা চালান এবং ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তাঁরা তাঁকে সেখানে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

কয়রা থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাইরের কোনো খবর নেই আমা‌দের কা‌ছে। উপ‌জেলা পরিষদের চেয়ারম‌্যান মারা গে‌ছেন কি না জা‌নি না। আমরা থানার ভেতরে আছি। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত বাইরে যাওয়া যাবে না।’