জামালপুর শহরজুড়ে সাজ সাজ রব। সম্মেলনস্থলসহ শহরের অলিগলির সড়ক তোরণ, ফেস্টুন আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে। নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক তোরণ। উপলক্ষ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এর মাধ্যমে আজ সোমবার বিকেলে নির্ধারণ করা হবে দলটির নতুন নেতৃত্ব। তবে সভাপতি পদের চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। এ পদে প্রার্থী চারজন।
প্রায় সাড়ে সাত বছর পর জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হচ্ছে। আজ দুপুরে জামালপুর জিলা স্কুলের মাঠে ওই সম্মেলন হবে। সম্মেলন ঘিরে জেলাজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে সবার মধ্যে আলোচনা একটাই, সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন।
দলীয় শীর্ষ পর্যায়ের সূত্রগুলো বলছে, পরবর্তী কমিটির শীর্ষ দুই পদ প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে সবাইকে অন্ধকারেই থাকতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, মূলত সাধারণ সম্পাদকই দলকে সামনে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বা আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। দলীয় বড় অনুষ্ঠান বা কর্মসূচিগুলোর সার্বিক দায়িত্ব থাকে সাধারণ সম্পাদকের হাতে। কর্মী সমাগম থেকে শুরু করে সবকিছু তাঁকেই দেখতে হয়। ফলে এই পদে দাপুটে কাউকেই চান তৃণমূলের নেতারা।
দলীয় কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি পদে মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ই থাকছেন, এমনটাই ধরে নিয়েছেন তাঁরা। কারণ, মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও অভিজ্ঞ নেতা। সেই কারণে তিনি এখন পর্যন্ত একক প্রার্থী হিসেবে আছেন। তবে গত শনিবার রাত থেকে জেলাজুড়ে সম্পাদক পদে নতুন কেউ আসার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে জেলায় তুমুল আলোচনা চলছে।
২০১৫ সালের ২০ মে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। সম্মেলনে মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ সভাপতি এবং ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর এক বছর পর গঠিত হয় ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
জেলার কয়েক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ একক প্রার্থী। আর সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর নামের সঙ্গে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম জাফর ইকবাল ও সদস্য রেজাউল করীম রেজনুর আছেন।
সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। আর এই দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবেই। তবে নেতৃত্ব নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই এবং সবাই ঐক্যবদ্ধ। অতীতের থেকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ অনেক বেশি সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত। দলীয় প্রধান তাঁর কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য যাঁকে উপযুক্ত মনে করবেন এবং যাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারবেন, তাঁরাই শীর্ষ পদে আসবেন—এমনটাই আমরা প্রত্যাশা করি।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেবেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার প্রমুখ।