ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিএনজি নিতে হবে রাত ১১টার পর, আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের চারটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন চালক ও মালিকেরা। হাইওয়ে পুলিশের এ সিদ্ধান্তের দ্রুত পরিবর্তন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশের এই সিদ্ধান্তের ফলে তিন দিন ধরে সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ফিলিং স্টেশনগুলো অটোরিকশায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এতে জেলার কয়েক হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক দুর্ভোগে পড়েছেন।

জানা গেছে, গত ২৮ জুন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের চারটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনকে একটি চিঠি দিয়েছেন সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশীষ কুমার সান্যাল। এতে বলা হয়েছে, সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সময়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ি এবং মহাসড়কের ওপর অবৈধভাবে পার্কিং করা গাড়িতে যেন গ্যাস সরবরাহ না করা হয়। ওই চারটি ফিলিং স্টেশন হলো সরাইল বিশ্বরোড মোড়ের গরিবে নেওয়াজ ফিলিং স্টেশন, ফাহাদ ফিলিং স্টেশন, সাফকো সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন ও সোপান ফিলিং স্টেশন।

হাইওয়ে পুলিশের এমন সিদ্ধান্তে অটোরিকশার চালকেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এবং ফিলিং স্টেশনের মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়া হঠাৎ পুলিশের এমন নির্দেশনায় আমাদের চালকেরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এই নিয়ম চলতে থাকলে চালকেরা অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্দোলনে যাব।
জেলার সিএনজি চালক ও মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল কুদ্দুস

মেসার্স গরিবে নেওয়াজ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোনায়েম মিয়া ও ফাহাদ ফিলিং স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সঞ্জীব বর্মণ বলেন, হাইওয়ে পুলিশের নির্দেশনার কারণে দিনের বেলায় অটোরিকশায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পেট্রলপাম্পের মালিকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

অটোরিকশাচালক রুমেল মিয়া ও সজল মিয়া বলেন, সারা রাত জেগে গ্যাস নিয়ে পরের দিন গাড়ি চালালে চালকদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।

জেলা সিএনজি চালক ও মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়া হঠাৎ পুলিশের এমন নির্দেশনায় আমাদের চালকেরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এই নিয়ম চলতে থাকলে চালকেরা অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্দোলনে যাব।’

যানজট নিরসনের জন্য হাইওয়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ওই চার ফিলিং স্টেশনে চিঠি দিয়েছি। দাপ্তরিকভাবে এ ধরনের চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি আশীষ কুমার সান্যাল

বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভারশন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারহান নূর প্রথম আলোকে বলেন, ‘চারটি প্রতিষ্ঠানকে এই চিঠি দিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। তাদের আদেশ আমরা পালন করছি। তবে ওই চিঠির বিষয়ে আমাদের তিনটি আপত্তি আছে। এক. পেট্রলপাম্প বা ফিলিং স্টেশনকে এই ধরনের চিঠি দেওয়া হাইওয়ের পুলিশের এখতিয়ারবহির্ভূত। দুই. এই চিঠি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এর পেছনে কোনো কারণ থাকতে পারে। তিন. এই চিঠি প্রত্যাহার করতে হবে। এই চিঠি প্রত্যাহার না করলে আমি আইনগত পদক্ষেপ নেব।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি আশীষ কুমার সান্যাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘যানজট নিরসনের জন্য হাইওয়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ওই চার ফিলিং স্টেশনে চিঠি দিয়েছি। দাপ্তরিকভাবে এ ধরনের চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ।’