দিনাজপুর-১ আসনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাকারিয়ার কর্মী-সমর্থকেরা গতকাল সড়কে উল্লাস প্রকাশ করেন
দিনাজপুর-১ আসনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাকারিয়ার কর্মী-সমর্থকেরা গতকাল সড়কে উল্লাস প্রকাশ করেন

চারবারের সংসদ সদস্যকে হারিয়ে জয়ী জাকারিয়া

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনে চারবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপালের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাকারিয়া। ৯ হাজার ১৭ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি।

ভোটে জয়লাভের পরই ওই আসনে মো. জাকারিয়ার সমর্থকদের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ। অন্যদিকে গোপালের হারের কারণ নিয়েও চলছে নানা আলোচনা।

বীরগঞ্জ-কাহারোল দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে দিনাজপুর-১ আসন। আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮২৬। মোট ১২৩টি ভোটকেন্দ্রে ভোট পড়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৭২৭টি, যা মোট ভোটের ৫৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এখানে নৌকা প্রতীকে মনোরঞ্জন শীল গোপাল পেয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৪৯৯ ভোট এবং ট্রাক প্রতীকে জাকারিয়া পেয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৫১৬ ভোট।

এই আসনে ২০০১ সালের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কাফি। তাঁর মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পান মনোরঞ্জন শীল গোপাল। কিছুদিন পরই যোগ দেন আওয়ামী লীগে। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে জয় পান তিনি। মনোরঞ্জন শীলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী এলাকায় না থাকা, দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, বিপুল অর্থের মালিক, নিয়োগবাণিজ্য, জমি দখলসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন দলের নেতা-কর্মীসহ স্থানীয় ভোটাররা।

গতকাল সোমবার বীরগঞ্জ-কাহারোল উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে কথা হয় ভোটারদের সঙ্গে। জয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সকাল থেকে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. জাকারিয়ার বাড়িতে ছিল উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে তাঁর সমর্থকেরা মোটরসাইকেল, ট্রাক্টরে করে আনন্দমিছিলসহ ফুলের মালা, মিষ্টি নিয়ে সাক্ষাৎ করতে আসছেন।

মো. জাকারিয়ার বাবা ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি একবার উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে জয় পাননি। এবার সরাসরি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ধান-চালসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের ব্যবসার পাশাপাশি ইটভাটার মালিক তিনি। পৈতৃক ব্যবসার পাশাপাশি ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ১৯৮৬ সালে বীরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন তিনি। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। টানা ২০ বছর ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।