বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর তিন কর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। তাঁরা দাবি করেছেন, হামলার ঘটনাটি পরিকল্পিত। এর সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহম্মেদের সম্পৃক্ততা নেই।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের সােহেল চত্বরে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে একটি ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর দায় চাপানো হয়েছে।’
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নগরের কাউনিয়ার বাঁশ বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর তিন কর্মীকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। তাঁদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহম্মেদসহ তাঁর সহযোগীরা রামদা, লাঠি, রড নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনার পর রোববার মধ্যরাতে রইস আহম্মেদ ও তাঁর সহযোগীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে কাউনিয়া থানার পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘যে ঘটনায় পুলিশ রইস আহম্মেদকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, সেই ঘটনাস্থলের দুই কিলোমিটারের মধ্যেও রইস আহম্মেদ ছিলেন না। এমনকি এ ঘটনা সম্পর্কিত কোনো ভিডিও ফুটেজও কেউ উত্থাপন করতে পারেনি। আমরা মহানগর আওয়ামী লীগ এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এ কে এম জাহাঙ্গীর। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন ঘোষণার পর আমরা বলেছি, দলীয় প্রার্থীর পক্ষে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে, ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই মাঠে নামব। কিন্তু মনোনয়ন ঘোষণার পরই একটি মহল বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে নির্বাচনী কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা এখনো বলি, আমরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামব। সুতরাং এই সংবাদ সম্মেলন কোনোভাবেই নৌকা বা প্রার্থীর বিপক্ষে নয়।’
আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু না হলেও নির্বাচনী কার্যক্রম নানাভাবে চলছে। কিন্তু মনোনয়ন ঘোষণার পর এক মাস পার হলেও আপনারা প্রার্থীর পাশে নেই, যোগযোগও রাখছেন না, এটা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘গত ১৮ এপ্রিল প্রার্থী (আবুল খায়ের আবদুল্লাহ) বরিশালে আসার পর নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে আমি সভাপতিত্ব করেছি। এরপর প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও আমিসহ অনেক নেতা ছিলেন। তাই এ কথা ঠিক নয় যে আমরা প্রার্থীর সঙ্গে নেই।’
নির্বাচনী গণসংযোগে নগরের ৩০টি ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের চুপচাপ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, আনোয়ার হোসাইন, গাজী নঈমুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহামুদ, সদস্য রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।