কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেবেরচরে নৌকাবাইচ দেখতে গিয়ে নদীতে ডুবে নিখোঁজের ৩৯ ঘণ্টা পর তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আজ বুধবার সকাল পৌনে নয়টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ওই তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের নামখাইল এলাকা থেকে মো. শামীম মিয়া (৩০) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। শামীম হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের বাসিন্দা। ২৫ সেপ্টেম্বর (রোববার) তাঁর ওমান যাওয়ার কথা ছিল।
শামীমের ভাতিজা হাসিবুর রহমান বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর চাচার ওমান যাওয়ার কথা ছিল। তাঁর বিমানের টিকিট কাটা হয়ে গিয়েছিল। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন। তাঁর এমন মৃত্যুতে পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আবুজর গিফারী বলেন, আজ সকালে জেলার হোসেনপুরের সিদলা ইউনিয়নের সাহেবেরচর এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের অদূরে শামীমের লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয় ব্যক্তিরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন।
এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে হোসেনপুর উপজেলার সাহেবেরচর গ্রামের হোসেনপুর-গফরগাঁও সীমান্তবর্তী এলাকায় নৌকাবাইচ দেখতে গিয়ে এ নৌ দুর্ঘটনা ঘটে। এর পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করেছিল। শামীম মিয়া ছাড়া বাকি দুজন হলো ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরশাখচুড়া গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে সিফাত (১৬), একই গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে ইয়াছিন (৭)।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. আবুজর গিফারী বলেন, আজ সকাল পৌনে নয়টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে সিফাত ও ইয়াছিনের লাশ আর ছয় কিলোমিটার দূরে শামীমের লাশ ভেসে ওঠে। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সিদলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে সোমবার বিকেলে সাহেবেরচর গ্রামের পাশে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে আশপাশের এলাকা থেকে হাজারো মানুষের ঢল নামে। এর মধ্যে অনেকে ছোট নৌকা নিয়ে নৌকাবাইচ উপভোগ করছিলেন। শামীম, সিফাত ও ইয়াছিন স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে একটি ছোট নৌকায় ওঠেন। কিছুক্ষণ পর নৌকাটি আরেক নৌকার সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এ সময় অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও শামীম, সিফাত ও ইয়াছিন নদের পানিতে তলিয়ে যান।