চট্টগ্রামে সংবর্ধনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পুরোনো স্টেশনে
চট্টগ্রামে সংবর্ধনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পুরোনো স্টেশনে

নগরপিতা নন, সেবক হতে চান শাহাদাত

নগরপিতা নন, নগরসেবক হিসেবে চট্টগ্রামবাসীর পাশে থাকতে চান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেছেন, ৭০ লাখ মানুষের নগরসেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চান। জাতি–ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে নগরে যত নাগরিক আছেন, সবার পাশে থাকবেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পুরোনো স্টেশনে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় এসব কথা বলেন নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেন। গত রোববার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নেন তিনি। শপথ নেওয়ার পর আজ ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে চট্টগ্রামে আসেন তিনি। এরপর তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম নগরকে ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে সময় চেয়েছেন শাহাদাত হোসেন। মেয়র হিসেবে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অক্ষরে–অক্ষরে পালন করবেন বলে জানান। এ জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা চান তিনি।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, নগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ঋণ শোধ করতে পারবেন না। তাঁরা ১৮ বছর ধরে স্বৈরাচারী সরকারের নিপীড়ন–নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁরা ঘরে থাকতে পারেননি, পরিবারের কাছ থেকে দূরে ছিলেন। অর্থাভাবে–অনাহারে তাঁরা দিন কাটিয়েছেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মেয়র শাহাদাত হোসেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের ধন্যবাদ জানা তিনি।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের পাশাপাশি বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে মঞ্চে নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্যসচিব নাজিমুর রহমানকে দেখা যায়নি।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত ধানের শিষ প্রতীকে পান ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া আওয়ামী লীগের নগর কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক শাহাদাত।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই মামলার রায়ে গত ১ অক্টোবর শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করেন চট্টগ্রামের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীন। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম সিটির মেয়র হিসেবে রোববার সকালে সচিবালয়ে শপথ নিয়েছেন শাহাদাত হোসেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন। একই সঙ্গে কাউন্সিলর না থাকায় করপোরেশন পরিচালনার জন্য ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিয়েছেন।