ভারতীয় দুই নাগরিকের লাশ দীর্ঘদিন ধরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে রাখা আছে। লাশ দুটি নিয়ে বিপাকে পড়েছে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ। কারণ, তাঁদের লাশ পাহারা দিতে হচ্ছে কারারক্ষীদের।
এ ছাড়া লাশ রাখা ও সংরক্ষণের ভাড়া বাবদ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা চেয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ওই দুজন হলেন সতেন্দ্র কুমার ও বাবুল সিং। অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেপ্তার ভারতীয় ওই দুই নাগরিক শরীয়তপুর জেলা কারাগারে বন্দী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সতেন্দ্র ১১ মাস ও বাবুল সাড়ে ৭ মাস আগে মারা গেছেন।
জেলা কারাগার ও সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় গত জানুয়ারিতে ৪৬ জন ভারতীয় নাগরিক শরীয়তপুর জেলা কারাগারে বন্দী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আটজন ছিলেন নারী। ওই ভারতীয় নাগরিকদের পদ্মা সেতুর আশপাশের স্থান থেকে বিভিন্ন সময় আটক করা হয়েছিল। বর্তমানে ২০ ভারতীয় নাগরিক জেলা কারাগারে রয়েছেন।
১৮ জানুয়ারি শরীয়তপুর জেলা কারাগারে বন্দী ভারতীয় নাগরিক সতেন্দ্র কুমার (৪০) মারা যান। আর ১৪ এপ্রিল রাতে বাবুল সিং (৩৮) অসুস্থ হয়ে মারা যান। এর পর থেকে তাঁদের লাশ সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে কোনো হিমাগার নেই। হাসপাতালের নিচতলায় একটি কক্ষে একটি ফ্রিজে ৩-৪টি লাশ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই ফ্রিজটিতে ভারতীয় দুই নাগরিকের লাশ রাখা হয়েছে। ওই লাশ দুটি হাসপাতালের যে কক্ষে রাখা আছে, তার সামনে একজন কারারক্ষী পাহারায় থাকেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবীবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে কোনো হিমাগার নেই। বিশেষ ব্যবস্থায় বড় ফ্রিজে করে ভারতীয় দুই নাগরিকের লাশ রাখা হয়েছে। তাতে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বিল এসেছে। ওই টাকা পরিশোধের জন্য শরীয়তপুরের জেল সুপারকে চিঠি দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জেলা কারাগারের জেলার মুহাম্মদ আবু সাজ্জাত বলেন, দুজন ভারতীয় নাগরিক বন্দীর লাশ ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এখনো নেয়নি। তাই হাসপাতালের ফ্রিজে রাখা হয়েছে। সেখানে কারারক্ষীরা তা পাহারা দিচ্ছেন। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার একটি বিল পাঠিয়েছে। তারা সেটা কারা অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছে।
জেল সুপারের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, শরীয়তপুর জেলা কারাগারে কয়েকজন ভারতীয় নাগরিক অনুপ্রবেশ মামলায় বন্দী আছেন। ভারতীয় দূতাবাস দুজন বন্দী মারা যাওয়ার বিষয়টি জানে। তারা দুই দফায় শরীয়তপুর এসে এ–সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। পরে কী হয়েছে তা তারা জানে না। আর হাসপাতালের বিলের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।