পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ‘সালানা জলসা’ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ঘিরে সংঘর্ষ, বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল ১৯৩।
এদিকে গতকাল সোমবার বিকেল থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে পঞ্চগড় সদর থানায় নতুন করে আরও দুটি মামলা হয়েছে। এতে মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়াল ২৫। এর মধ্যে সদর থানায় মামলা করা হয়েছে ২০টি এবং বোদা থানায় মামলার সংখ্যা ৫টি। এসব মামলায় আসামি সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি।
পঞ্চগড় জেলা শহর, আহম্মদনগর ও শালশিড়িতে আহমদিয়া সম্প্রদায়-অধ্যুষিত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান ও নজরদারি অব্যাহত আছে। ওই ঘটনার পর থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ২৩টি মামলায় ১৯০ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর গতকাল রাতভর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। বিপুলসংখ্যক আসামি গ্রেপ্তারের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার-আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হবে না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা আজ সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, জেলার পরিবেশ বর্তমানে স্বাভাবিক আছে। এখন পর্যন্ত মোট ২৫টি মামলায় ১৯৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী কাজ করছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমেই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
এর আগে পঞ্চগড় শহরের পাশে আহম্মদনগর এলাকায় আহমদিয়া জামাতের জলসা বন্ধের দাবিতে ৩ মার্চ জুমার নামাজের পর পঞ্চগড় শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মিছিল বের করা হয়। এতে পুলিশ বাধা দেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একদল বিক্ষোভকারী আহম্মদনগর এলাকায় গিয়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হন। পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত হন শতাধিক মানুষ।