বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘সরকার সারা দেশের মানুষের গণতন্ত্র হরণ করেছে। মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দেশে একদলীয় বাকশাল কয়েম করেছে। তারা মনে করে, আওয়ামী লীগ যা বলবে, দেশের ১৮ কোটি মানুষ তা–ই মানতে বাধ্য হবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকার ফেরত পেতে চায়। দেশের মানুষ আজ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন। কাজেই সরকারের আর টিকে থাকার অধিকার নাই।’
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় ময়মনসিংহের ত্রিশালে বিএনপির রোডমার্চ কর্মসূচির উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল মঈন খান এসব কথা বলেন। তাঁর বক্তব্যের পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার বগার বাজার থেকে কিশোরগঞ্জ অভিমুখে রোডমার্চ শুরু হয়।
রোডমার্চের শুরুতে বগার বাজারে পথসভার আয়োজন করে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি। সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপির এক দফা আন্দোলনের সঙ্গে রাজপথের আশপাশের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে তাঁরা রোডমার্চ করছেন। শান্তিপূর্ণ একটি আন্দোলন। এ আন্দোলনেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই। যেহেতু দেশের মানুষ এ সরকারকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেনি, কাজেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো অধিকার নাই।’
আদালতের রায় ছিল, আরও দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন হওয়া উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘কিন্তু তারা (আওয়ামী লীগ) হাইকোর্টের রায়কে বিকৃত করে নিজেদের স্বার্থে আইন সংশোধন করেছে। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলে সরকার সংবিধানের কথা বলে। অথচ ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিল, তখনো সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল না।’
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘আমাদের সময়ে বেগমপাড়া ছিল না, সেকেন্ড হোম ছিল না, দুবাইয়ে গুলশান-৩ ছিল না। এসব আমরা আগে শুনিনি। কারা দেশের শ্রমিকের কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে পাঠায়, সরকার তা জানে। কিন্তু কোনো বিচার করবে না।’
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেয় অভিযোগ করে বিএনপির যুগ্ম সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘তাঁদের বলছি, যাঁরা বাধা দেবেন, তাঁদের দীর্ঘদিন মনে রাখা হবে।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বগার বাজার থেকে রোডমার্চটি কিশোরগঞ্জ বাইপাসে গিয়ে শেষ হবে। ১১৪ কিলোমিটার এ রোডমার্চে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চুরখাই, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের চায়না মোড়, শম্ভুগঞ্জ, ঈশ্বরগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জে সভা হবে।
সরকারের পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনের অংশ হিসেবে বর্তমানে রাজধানী ঢাকা ঘিরে সমাবেশ, পেশাজীবী সম্মেলন ও অঞ্চলভিত্তিক রোডমার্চ কর্মসূচি করছে বিএনপি। গত ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ১৫ দিনের এ কর্মসূচি ৫ অক্টোবর কুমিল্লা-ফেনী-মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। চট্টগ্রামে রোডমার্চ শেষে সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।