বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রয়াত এক আওয়ামী লীগ নেতার জমিসহ ৯টি দোকানঘর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতাদের ছবিসংবলিত সাইনবোর্ড টাঙিয়ে এই দখলের ঘটনা ঘটেছে। ওই আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে মাহমুদুল হাসান আজ বুধবার মোরেলগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এই দখলে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। পৌর বিএনপির আহ্বায়কও দখলের বিষয়টি স্বীকার করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
মাহমুদুল হাসান মোরেলগঞ্জের সরকারি সিরাজ উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি প্রয়াত শাহবুদ্দিন তালুকদারের ছেলে। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তাঁর বাবা তিন বছর আগে মারা যান। মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের নব্বইরশী বাসস্ট্যান্ডের মডেল মসজিদের সামনে পৈতৃকসূত্রে পাওয়া তাঁর সাড়ে ৫৫ শতক জমি রয়েছে। ওই জমির একটি অংশে ৯টি দোকান তৈরি করে ২০০৭ সাল থেকে ভাড়া দিয়ে আসছেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে ওই দিন বিকেলে মোরেলগঞ্জ পৌর বিএনপির ৪ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আমির আলী তালুকদার ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের সব কটি দোকান দখল করে নেন। আমির আলী সেখানে বিএনপির কার্যালয় করার কথা বলে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ছবিসংবলিত সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন এবং দোকানগুলোয় তালা মেরে দেন।
দোকানগুলো থেকে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মাহমুদুল হাসান।
এর দুই দিন পরে সেখানে লাগানো সাইনবোর্ড খুলে ফেলে আমির আলী একটি দোকানে নতুন ভাড়াটে তুলে দেন। সেই সঙ্গে অপর আটটি দোকানের ভাড়াটেদের কাছ থেকে ভাড়ার টাকা আদায় করতে শুরু করেন। সেখানে থাকা দোকানগুলো থেকে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মাহমুদুল হাসান।
মাহমুদুল বলেন, ‘আমার বাবা শিক্ষক ছিলেন। সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছেন। বিএনপির অফিস করার প্রয়োজন হলে আমি জমি লিখে দেব। কিন্তু সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দলকে ছোট করে কেন দখল করা হচ্ছে?’
তবে দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা আমির আলী তালুকদার বলেন, এখানে জোরপূর্বক দখলের কিছু হয়নি। তাঁর জমি এত দিন দখল করে রেখেছিলেন প্রয়াত শাহবুদ্দিন তালুকদার। সেই জমি ও দোকান তিনি ফিরিয়ে নিয়েছেন। ভাড়াটেদের সঙ্গে তাঁর নতুন করে চুক্তি হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে মোরেলগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক শিকদার ফরিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দখলের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলেছি। বিষয়টি জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে। জেলা কমিটি আমির আলীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে বলেছে। দলীয় নিয়ম অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’