জামালপুরের বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মারধরের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সব ধরনের সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে কাজে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা।
আজ সকাল নয়টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়। এতে লেখা রয়েছে, ‘হাসপাতালের ডাক্তার ও অন্য কর্মচারীদের অন্যায়ভাবে মারধর করার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি’। এতে সকাল থেকে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগী ফিরে যান। বিপাকে পড়েন হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরাও। এ প্রতিবেদন লেখার সময় আজ বেলা তিনটার দিকে চিকিৎসাসেবা বন্ধ ছিল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যার দিকে বুকে ব্যথা নিয়ে উপজেলার সীমারপাড় গ্রামের রিকশাচালক রজব আলী (৪৫) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে তাঁর স্বজনেরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আসমা লাবনীসহ কর্মচারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারধর করেন।
আরএমও আসমা লাবনী বলেন, ‘রোগীর অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু রোগীর স্বজনেরা আর্থিক সংকটের কথা বলে এখানেই ভর্তি করেন। তাঁর চিকিৎসায় কোনো অবহেলা হয়নি। তারপরও রোগীর স্বজনেরা আমাকে লাঞ্ছিত ও মারধর করেন।’
নিহত রজব আলীর ছেলে নুর আলম বলেন, ‘আমার বাবার অবস্থা খারাপের দিকে গেলে কর্তব্যরত আরএমও আসমা লাবনীকে ডাকাডাকি করা হয়। কিন্তু তিনি ওই সময় আসেননি। একপর্যায়ে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। চিকিৎসা অবহেলায় আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে। আমি কাউকে মারধর করি নাই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, ‘একজন নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় আমরা বসে থাকতে পারি না। আমাদের দাবি মানা না হলে, কর্মবিরতি চলতেই থাকবে। আমরা এ ঘটনায় মামলা দায়ের করব।’
এ বিষয়ে জামালপুরের সিভিল সার্জন ফজলুল হক বলেন, ‘আমি বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছি। সবার সঙ্গে আলোচনা করতেছি। এই মুহূর্তে চিকিৎসাসেবা বন্ধ আছে। তবে সেবা তো বন্ধ রাখা যাবে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেবা চালু করা হবে।’