চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ)

নির্বাচনী সংঘাতে পুলিশের মামলায় আসামি আ.লীগের নেতা-কর্মীরা

চট্টগ্রাম–৩ (সন্দ্বীপ) আসনে নির্বাচনী সহিংসতায় পুলিশ সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ৬৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মগধরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম, গাছুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আদনান জাবেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল ও পৌরসভা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সুমন রয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্দ্বীপ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জয়নুল বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের মুন্সিরহাট বাজার এলাকায় পূর্বনির্ধারিত সময়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের প্রচার চালাচ্ছিলেন। ঈগল প্রতীকের কর্মী–সমর্থকেরা তাঁদের প্রচার-প্রচারণা শেষ করে ফেরার পথে মিছিল করছিলেন। এ সময় সেখানে নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা পাল্টা মিছিল করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর তিন কর্মী ও নৌকা প্রতীকের এক কর্মী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পক্ষ থেকে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। ঘটনার পরদিন প্রত্যাহার করা হয়েছে সন্দ্বীপ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. জাহিদ হাসানকে।

এ ঘটনায় আজ পুলিশের পক্ষ থেকে করা মামলার এজাহারে বলা হয়, মুখোমুখি হলে সংঘর্ষের কথা চিন্তা করে নৌকার কর্মীদের মিছিল করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। কিন্তু নৌকার কর্মীরা তাদের বিধিনিষেধ অমান্য করে ঈগলের কর্মীদের পেছনে পেছনে উত্তেজনামূলক স্লোগান দিয়ে এগোতে থাকেন। এ সময় ঈগল প্রতীকের কর্মীরা পেছনে ফিরলে দুই পক্ষ মুখোমুখি হয় এবং পুলিশ তাদের দুই পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নেয়। এ সময় আসামিরা পুলিশকে হত্যার হুমকি দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন।

জানতে চাইলে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের কারা কোন দলের কর্মী তা দেখা হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে যাঁরা জড়িত, শুধু তাঁদের আসামি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এজাহারে নাম উল্লেখ করা ১৯ আসামির মধ্যে ১৭ জন নৌকার কর্মী ও ২ জন ঈগল প্রতীকের কর্মী। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের কর্মী–সমর্থক।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ হত্যাচেষ্টার মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁদের অনেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের কেন মামলায় দেওয়া হয়েছে, তা তাঁর বোধগম্য নয়।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম–৩ সন্দ্বীপে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মাহফুজুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী লড়ছেন।