চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় দুই বছর বয়সী সন্তানকে মায়ের নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ওই শিশুকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি শিশুটির মাকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার হারিয়া গ্রামে দাদার বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ন রশিদ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান।
ফাহাদ হোসেন নামের শিশুটিকে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় শাহরাস্তি থানায় শিশুটির দাদা আবদুল করিম বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ইউএনও মো. হুমায়ন রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার শিশু নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়। ভিডিও দেখে তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটির দাদার বাড়ি হারিয়া গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করেন তাঁরা। পরে শিশুটির মায়ের কাছ থেকে জানতে পারেন, তাঁর স্বামী মাহিন উদ্দিন সৌদি আরবে থাকেন। স্ত্রী-সন্তানের ভরণপোষণের জন্য কয়েক মাস ধরে তিনি বিদেশ থেকে টাকা পাঠান না। এ জন্য নিজের সন্তানকে লাঠি, ঝাড়ু দিয়ে পেটানোর ভিডিও বানিয়ে তিনি স্বামীকে পাঠান।
ইউএনও জানান, ভিডিওটি দেখে গতকাল রাতে ওসিকে সঙ্গে নিয়ে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটির মাকেও পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।
শিশুটির মা পারভিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৯ সালে মাহিন উদ্দিন ও তাঁর বিয়ে হয়। কিন্তু তাঁর স্বামীর পরিবার সেটা মেনে নেয়নি। দেড় বছর আগে স্বামী সৌদি আরবে চলে যান। লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে স্ত্রী-সন্তানের ভরণপোষণের জন্য প্রতি মাসে আট হাজার টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু গত তিন মাস তাঁর স্বামী টাকা দিচ্ছিলেন না। এ জন্য রাগে-ক্ষোভে তিনি সন্তানকে মারধরের একটি ভিডিও স্বামীকে পাঠান। কিন্তু স্বামীর পরিবারের লোকজন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছেন।
শাহরাস্তি থানার ওসি আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, মা ও শিশু—দুজনকেই পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।