শুষ্ক মৌসুমে সীতাকুণ্ডের ঝরনাগুলোতে তেমন পানি থাকে না। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সীতাকুণ্ডের ঝরনাগুলোতে প্রাণ ফিরে এসেছে। ফলে সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঝরনাগুলোর দিকে ছুটছেন পর্যটকেরা।
সীতাকুণ্ডে সহস্রধারা-১, রূপসী ঝরনা, সুপ্তধারা, সহস্রধারা-২, মধুখাইয়া, বাড়বকুণ্ডের অগ্নিকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া বিলাসী ঝরনা ও কুমারীকুণ্ড নামের আটটি ঝরনা আছে। এর মধ্যে সহজেই সহস্রধারা-২ ঝরনাটিতে যেতে পারেন পর্যটকেরা। কিন্তু বাকি সাতটি ঝরনায় যেতে হলে পর্যটকদের পাহাড় ডিঙিয়ে যেতে হয়। পাহাড় ডিঙিয়ে ঝরনার কাছে যাওয়াটা অনেকেই আবার অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে উপভোগ করেন।
পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইট-পাথরের নগরজীবন থেকে তাঁরা এক দিনের জন্য যখন ঝরনার সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন, তখন অন্য রকম ভালো লাগে। বিভিন্ন সময়ে অজগর, শজারু, বনবিড়াল, বনমোরগ, এমনকি হনুমানেরও দেখা মেলে। ঝরনার সৌন্দর্য মন উদাসীন করে তোলে। ঝরনার কাছে যেতেই পর্যটকেরা কেউ ঝরনার নিচে দাঁড়িয়ে নিজের গা এলিয়ে দিয়ে ভিজতে থাকে। আবার কেউ ঝরনার নিচে জমে থাকা পানিতে সাঁতার কাটেন।
সীতাকুণ্ডের ইকোপার্কে আছে দুটি ঝরনা। একটি সুপ্তধারা, অন্যটি সহস্রধারা-১ ঝরনা। আগে ইকোপার্কে প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য ছিল ৩০ টাকা। আগামী ১ জুলাই থেকে তা ৫০ টাকা হবে।
ইকোপার্কের সহস্রধারা-১ ঝরনায় গিয়ে দেখা গেছে, ঝরনাপ্রেমী পর্যটকেরা ভিড় করছেন। অনেকে তাঁদের শিশুসন্তান নিয়েও ঝরনা দেখতে এসেছেন। বন্ধুবান্ধব মিলে অনেকেই দল বেঁধে ঝরনা দেখতে আসেন। কথা হয় চট্টগ্রাম থেকে আসা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এক বছর পর আবার ঝরনা দেখতে এসে তাঁর খুবই ভালো লাগছে। তাঁরা বন্ধুরা মিলে ঝরনা দেখতে এসেছেন।
স্বামী ও শিশুসন্তানকে নিয়ে বেড়াতে আসা রত্না বিশ্বাস বলেন, কয়েক দিনের গরমে তাঁরা অতিষ্ঠ। বৃষ্টি হওয়ায় ঝরনা দেখতে এসেছেন। মূলত সন্তানকে ঝরনা দেখানোর জন্যই তাঁদের এখানে আসা। বর্ষা বেশি হলে পথঘাটের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। সে জন্য আগেভাগে ঝরনা দেখতে আনা।
ঢাকা থেকে কয়েক বন্ধুকে নিয়ে এসেছেন আবরার গালিব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি হলেই ঝরনাগুলোতে প্রাণ ফিরে আসে। তাঁরা ঝড়বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কয়েক দিনের অতিরিক্ত গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। ইচ্ছেমতো ভিজতে ইচ্ছে করছিল। তাই বৃষ্টির অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তাঁরা আর ধৈর্য ধরতে পারছিলেন না।
সীতাকুণ্ড ইকোপার্কের ইজারাদার মো. শাহাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বাজেটে সরকার পর্যটনের খরচ বৃদ্ধির কথা বলেছে। এ বিষয়ে তাঁরা বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে কর্তৃপক্ষ ইকোপার্কের প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা করার জন্য সম্মতি দেন।