মোগল আমলের সেতু ভাঙার সিদ্ধান্ত নিতে এবার গণশুনানির আয়োজন

সিলেটের গোলাপগঞ্জে মোগল আমলের সেতু ‘দেওয়ানের পুল’। পুরাতন সেতুটি ভেঙে আধুনিক যুগোপযোগী একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে এলজিইডি
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো মোগল আমলের ‘দেওয়ানের পুল’ ভাঙা হবে নাকি হবে না, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গণশুনানির আয়োজন করা হয়েছে। আগামী রোববার বেলা ১১টায় সেতুসংলগ্ন রাস্তায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এ শুনানির আয়োজন করেছে।

এলজিইডি সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী ইনামুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, পুরাতন সেতুটি ভেঙে আধুনিক যুগোপযোগী একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল এলজিইডি। পরে এ নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি হলে ভাঙার কাজ স্থগিত রাখা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন পুরাতন সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেন।

নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, স্থানীয় ব্যক্তিদের পাল্টাপাল্টি মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে গণশুনানির আয়োজন করা হয়েছে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গণশুনানি চলবে। সেখান থেকে প্রাপ্ত সুপারিশের ভিত্তিতেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১৫ জানুয়ারি গণশুনানি আয়োজনের নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত ছাড়াই এলজিইডির গণশুনানি আয়োজনের সমালোচনা করেছে পরিবেশকর্মী ও সচেতন মহল। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের কোষাধ্যক্ষ ছামির মাহমুদ বলেন, ‘ঐতিহাসিক দেওয়ানের পুল প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সম্পদ। আমরা যত দূর জানি, এটা ভাঙার অনুমোদন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দেয়নি। তাই এলজিইডি কর্তৃপক্ষের এটা ভাঙার অধিকার নেই। মোগল আমলের স্থাপত্য রক্ষায় সেতুটি যেখানে সংরক্ষণ করা উচিত, সেখানে সরকারি উদ্যোগে ঐতিহ্য ধ্বংসের এমন প্রক্রিয়া দুঃখজনক ও হতাশার।’

এর আগে গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাউশা এলাকার দেওরভাগা খালে অবস্থিত প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো মোগল আমলের ‘দেওয়ানের পুল’ ভাঙার কাজ শুরু করে এলজিইডি। ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে এখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণ হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে মোগল আমলে নির্মিত সেতুটি ভাঙার খবর পেয়ে স্থানীয় মানুষ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেতুটি অক্ষতভাবে রক্ষার দাবি জানায়। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্দেশনায় ২৮ ডিসেম্বর থেকে সেতু ভাঙার কাজ বন্ধ রাখা হয়।