খুলনায় নারী ফুটবলারদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বরিশালে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বরিশাল জেলা শাখা আজ শুক্রবার সকালে নগরের সদর রোডে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের নারীরা শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে খেলাধুলায় অংশ নিয়ে এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। অথচ নারী ক্রীড়াবিদদের বেড়ে ওঠার পরিবেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ প্রায় শূন্য। ফুটবল খেলার প্রয়োজনে নারীর যে পোশাকই পরতে হোক, সেটা নিয়ে কটূক্তি থেকে হামলা পর্যন্ত হওয়া আমাদের সমাজে বিদ্যমান মৌলবাদী কূপমণ্ডূক চিন্তারই পরিচায়ক।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের নারীরা এখন সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। ফুটবল, ক্রিকেট সব জায়গায় এখন নারীদের জয়জয়কার। কিন্তু খুলনার বটিয়াঘাটায় নারী ফুটবলারদের যেভাবে মারধর করা হয়েছে, তা খুবই অমানবিক। সাদিয়া ও মঙ্গলী বাগচীকে শুধু মারধরই করা হয়নি, তাদের দেড় ঘণ্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। প্রথম দিকে থানাও মামলা নিতে গড়িমসি করেছে। মারধরের ঘটনায় করা মামলা তুলে নিতে আসামিরা হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এটা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না।
অবিলম্বে নারী ফুটবলারদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, বটিয়াঘাটায় নারী ফুটবলারদের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটবে। নারী ক্রীড়াবিদদের এগিয়ে আসার অতি দুরূহ পথ একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে।
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি মাফিয়া বেগমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শানু বেগম, অর্থ সম্পাদক সালমা নাসরিন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সন্তু মিত্র, বাসদ উজিরপুর উপজেলার সংগঠক মঞ্জুর মোরশেদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্যসচিব সুজন সিকদার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ব্রজমোহন কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সদস্য ফারজানা প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
গত ২৯ জুলাই বিকেলে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামে চার নারী ফুটবলারকে মারধর করেন স্থানীয় কয়েকজন। তারা তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড়। খেলার সময় একাডেমির এক সদস্যের ছবি তুলে তার পরিবারের সদস্যদের দেখানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই মারধর করা হয়। এতে আহত হয় চার নারী ফুটবলার মঙ্গলী বাগচী, সাদিয়া নাসরিন, হাজেরা খাতুন ও জুঁই মণ্ডল। তারা বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলের নারী ফুটবলার।