দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়ায় ৩০ নেতা-কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। তাঁদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার লিখিত জবাব ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত নোটিশ আজ শুক্রবার সকালে ওই নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শওকত হোসেন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
বিএনপি নেতা শওকত হোসেন বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় দল থেকে ৩০ জনকে আলাদা আলাদা চিঠি দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, ‘১৫ বছর ধরে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ দেশপ্রেমিক জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর কারাভোগ করছেন। সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে। ইতিমধ্যে অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপি এই সরকারের অধীনে কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ আপনি দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন।’
নোটিশে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার লিখিত জবাব ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মহানগর বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নগরের বাসন থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুসা চৌধুরী, মেট্রো থানা বিএনপির সদস্য রফিকুল ইসলাম, মেট্রো থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হান্নান মিয়া, সদর মেট্রো থানার সদস্য জি এস মনির হোসেন, মহানগর মহিলা দলের সদস্য ফিরোজা বেগম, টঙ্গী পূর্ব থানার সাধারণ সম্পাদক সফি উদ্দিন, টঙ্গী পূর্ব থানা মহিলা দলে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হাসিনা মমতাজ, গাছা থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহফুজুর রহমান, পূবাইল মেট্রো থানা বিএনপির সদস্যসচিব নজরুল ইসলাম, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপির নেতা তানভীর আহমেদ, সুলতান উদ্দিন, আবুল হাসেম, সেলিম হোসেন, ফারুক হোসেন খান, কেয়া শারমিন, খন্দকার নুরুন নাহার, আউয়াল সরকার, মোবারক হোসেন, সবদের হোসেন, শিপু খান, শাহীন আলম, মো. শহীদ, মজিবর সরকার, খাইরুল আলম, হাসান আজমল ভূঁইয়া, বাবু চৌধুরী, আনোয়ার সরকার, শেখ আলেক, ফয়সাল সরকারসহ মোট ৩০ জনকে নোটিশ দেওয়া হয়।
গাজীপুর জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি কোনো মেয়র প্রার্থী দেয়নি। ৫৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় ৩৫টি ওয়ার্ডে বিএনপির কোনো কাউন্সিলর প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তবে দায়িত্বশীল কিছু নেতা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাঠে থেকে দলের কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন।