সিলেটের জৈন্তাপুরের উমনপুর গ্রামে পূর্ববিরোধের জেরে চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফারুক আহমদের নেতৃত্বে এক পরিবারের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ইউপি সদস্যের অনুসারীরা দুই বছর বয়সী এক শিশুকে কুপিয়ে জখম করেছেন। এ ছাড়া হামলাকারীরা ওই পরিবারের ১৭ জনকে পিটিয়ে আহত করেছেন।
হামলার ঘটনায় জৈন্তাপুর থানায় আজ শনিবার বিকেলে মামলা করেন হামলার শিকার পরিবারের সদস্য মো. তাহের আলী (৪৫)। এতে অভিযুক্ত হিসেবে ইউপি সদস্য ফারুক আহমদসহ উমনপুর গ্রামের ২৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, পূর্ববিরোধের জেরে ফারুক আহমদের নেতৃত্বে উমনপুর গ্রামের কিছু লোক তাহের আলীর বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় ঘরের টিনের বেড়াসহ বিভিন্ন আসবাব ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাহের আলীর পরিবারের কয়েকজনকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়। বাড়ির একাধিক নারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালানো হয়। পরিবারের দুই বছরের শিশু রিহান আহমদকে ধারালো দা দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়।
হামলায় আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে গুরুতর আহত অবস্থায় শিশু রিহান আহমদ, মহরম আলী (৬৫), ফাহিমা বেগম (৪০) ও আলবেনা বেগম (৩২) সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মামলার বাদী তাহের আলী বলেন, ‘হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাঙচুর করে ১৪ লাখ টাকা ক্ষতি করার পাশাপাশি প্রায় পৌনে ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছেন। এর আগে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের সমাজচ্যুত করার হুমকিও ফারুক আহমদের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা দিয়ে আসছিলেন।’ বিষয়টি তিনি গত ২৩ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
হামলার শিকার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, বাড়ির পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি নারী ও শিশুদের অমানুষিকভাবে হামলাকারীরা নির্যাতন করেছেন। ছোট বাচ্চাদের পর্যন্ত ধারালো দা দিয়ে আঘাত করার পাশাপাশি পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়েছে। আশপাশের বাসিন্দারা চলে আসায় হামলাকারীরা পালিয়ে যান। তবে বাড়িঘর ভাঙচুর করে পুরোপুরি বিধ্বস্ত করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য ফারুক আহমদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। দোষীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে।