বগুড়ায় প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দিনের নামে বানানো ফুটবল স্টেডিয়ামের নামফলক থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রয়াত সন্তান আরাফাত রহমানের (কোকো) নাম লেখা ব্যানার সরিয়ে দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। অতি উৎসাহী হয়ে আরাফাতের নামে ব্যানার টানানোয় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘ক্ষুব্ধ ও বিব্রত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম (বাদশা)।
বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের পাশে কয়েক বছর আগে বেসরকারি উদ্যোগে নির্মাণ করা হয় মমতাজ উদ্দিন ফুটবল স্টেডিয়াম। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের নামে এ স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছিলেন তাঁর ছেলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান (মিলন)। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর বিএনপির কিছু সমর্থক মমতাজ উদ্দিনের নাম মুছে দেন। তাঁরা স্টেডিয়ামের নাম পাল্টে সেখানে প্রয়াত আরাফাত রহমানের নাম লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। এ ঘটনার পর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয় ভাঙচুর ও মালপত্র লুটের অভিযোগ তুলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষে কোষাধ্যক্ষ রাশেদুর রহমান সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে জেলা ক্রীড়া সংস্থার একজন সদস্য এবং নাটাইপাড়া এলাকার এক ব্যক্তিকে ভাঙচুর, লুটপাট এবং ফুটবল স্টেডিয়ামের নাম বদলে ফেলার জন্য দায়ী করেন। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার স্টেডিয়াম থেকে ওই ব্যানার খুলে নেওয়া হয়েছে।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম এবং সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার নেতৃত্বে স্টেডিয়াম থেকে ব্যানার খুলে নেওয়া হয়। এ সময় রেজাউল করিম বলেন, বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম বিএনপি সরকার আমলে তারেক রহমানের নির্দেশে আধুনিকায়ন করা হয়। আরাফাত রহমানের ইচ্ছায় এই স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যুতে রূপ দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে স্টেডিয়ামে ১৬ বছরেও কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি। উল্টো স্টেডিয়ামের সরকারি জায়গা দখল করে ব্যক্তি নামে স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর অতি উৎসাহী কিছু ব্যক্তি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে রাতারাতি আরাফাত রহমানের নামকরণ করে এখানে ব্যানার টানিয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ও বিব্রত। তাঁর নির্দেশেই আরাফাত রহমানের ব্যানার খুলে নেওয়া হলো। এখন স্টেডিয়ামের নামকরণ কার নামে হবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মমতাজ উদ্দিন ফুটবল স্টেডিয়ামের জায়গার মালিক জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা। জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই জেলা ক্রীড়া সংস্থা কয়েক বছর আগে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের পাশে পুকুর ভরাট করে বেসরকারি উদ্যোগে ফুটবল স্টেডিয়াম গড়ে তোলে। ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান তাঁর বাবা প্রয়াত মমতাজ উদ্দিনের নামে এ স্টেডিয়ামের নামকরণ করেন। মাসুদুর রহমান আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।