প্রত্যাবাসন কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সমাবেশ করেছে কক্সবাজারের উখিয়ার লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নারীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের খোলা মাঠে এ সমাবেশ হয়। রোহিঙ্গা সমাজে নারীদের এ ধরনের সমাবেশ ব্যতিক্রম। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর এটিই রোহিঙ্গা নারীদের প্রথম সমাবেশ।
সমাবেশে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরের অন্তত ২ হাজার রোহিঙ্গা নারী অংশ নেন। আশ্রয়শিবিরগুলোয় বর্তমানে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছরেও একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।
‘রিইন্ট্রোডিউসিং উইম্যানস লিডারশিপ’ শিরোনামে নারী সমাবেশের আয়োজন করে এফডিএমএন রিপ্রেজেন্টেটিভ কমিটি। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সঙ্গে স্বদেশে ফেরাতে বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
রোহিঙ্গা নারীদের এই সমাবেশ সময়োপযোগী দাবি করে মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্বায়নের এই সময়ে নারীর ক্ষমতায়নের বিকল্প নেই। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হওয়া সত্ত্বেও আজ রোহিঙ্গা নারীরা প্রচলিত প্রথা ভেঙে এখানে জড়ো হয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষেরা ঐক্যবদ্ধ ও সোচ্চার থাকলে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে।
সমাবেশে বক্তব্যে দেন উখিয়ার তানজিমারখোলা আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নারী রশিদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ, তারা আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা এমন আশ্রিত জীবন চাই না, ফিরতে চাই নিজেদের প্রিয় জন্মভূমিতে।’
সমাবেশের আয়োজক এফডিএমএন রিপ্রেজেন্টেটিভ কমিটির নেতা মোহাম্মদ সৈয়দুল্লাহ বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৫০ শতাংশই নারী, আমরা চেয়েছি, আমাদের বাড়ি ফেরা কর্মসূচিতে তাঁরাও যুক্ত হোন। বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়ার ছয় বছরের মাথায় এই প্রথম দুই হাজার নারী সমাবেশ করে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানালেন।’