ভূমিসেবায় হয়রানি বন্ধে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, জরিপের ওপর নির্ভর করে খতিয়ান ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিয়ে আসা হচ্ছে। ভূমিসেবায় ই-নামজারি, ই-খাজনা দেওয়া চালু করা হয়েছে। কোনো গ্রাহককে অফিসে গিয়ে আর হয়রানির শিকার হতে হবে না। আজ সোমবার সকালে রংপুর সফরে এসে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয় জড়িত। এটিতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা দরকার। আমরা পর্যায়ক্রমে ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ভূমিসেবাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাব যেন জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে জানা যাবে একজন ব্যক্তির কী পরিমাণ এবং কোন খতিয়ানে কতটুকু জমি আছে। ফলে জাল দলিলের সমস্যা আর হবে না।’
খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে তিন ফসলি, দো–ফসলি জমি অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তিনি বলেন, কৃষিজমি নষ্ট না করে জনসংখ্যা অনুপাতে খাদ্যের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে এক ফসলি জমি অন্য কাজে ব্যবহার করা হলেও সরকারের অনুমতি নিতে হবে।
পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুরকে শস্যভান্ডার মন্তব্য করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘এসব জমি আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। সুন্দর ভূমি ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য যেন খাদ্য নিশ্চিত করতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
দখল হওয়া নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয় উদ্ধার সময়সাপেক্ষ ও কঠিন ব্যাপার মন্তব্য করে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ডিজিটাল জরিপ অনুযায়ী সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খাসজমি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির শ্রেণিবিন্যাস করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। জেলা ও মৌজা অনুযায়ী খাল-বিল ও খাসজমির তালিকা আছে। সেটার মধ্যে কতটুকু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং কতটুকু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, তা জেলা প্রশাসক নির্ধারণ করবেন। কিন্তু দীর্ঘদিন এই ব্যবস্থা না করার কারণে এটি এমন একপর্যায়ে চলে গেছে যে এটি সময়সাপেক্ষ এবং কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খাসজমি, ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির শ্রেণিবিন্যাস করা হবে ডিজিটাল জরিপে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুস সবুর মণ্ডল, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, পুলিশের উপকমিশনার আবু মারুফ হোসেন প্রমুখ।