জাতীয় গ্রিডের চট্টগ্রামের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট লাইনে পাইপ ফেটে যাওয়ায় কুমিল্লায় গ্যাসসংকট দেখা দিয়েছে। এতে রান্না করতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কুমিল্লা নগরবাসী।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরের রেস্তোরাঁগুলোতে বেড়েছে মানুষের ভিড়। অনেক বাসাবাড়িতে ব্যবহার করা হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস। কোথাও কোথাও মাটির চুলায় রান্না করতে দেখা গেছে।
কুমিল্লা নগরের ঝাউতলা এলাকার দাওয়াত রেস্টুরেন্টের মালিক কামাল উদ্দিন খান বলেন, গতকাল বুধবার থেকে তাঁর রেস্তোরাঁয় অনেক বেশি ক্রেতা আসছেন। অনেকে রুটি, সবজি, ভাত ও তরকারি পার্সেল নিয়ে বাসায় যাচ্ছেন।
কুমিল্লা পুলিশ লাইনস এলাকায় বসবাস করেন গৃহবধূ আসমা আক্তার। তিনি বলেন, গতকাল সকাল থেকে গ্যাস নেই। কখন আসবে তা–ও জানেন না। গতকাল সকাল, দুপুর ও রাতে হোটেল থেকে ভাত-তরকারি এনে খেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাসার ছাদে মাটির চুলায় কাঠ পুড়িয়ে রান্না করেছেন।
নগরের ছোটরা এলাকার বাসিন্দা জহিরুল হক বলেন, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে তাঁর বাড়ির লাইনে গ্যাস নেই। আজ সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে হোটেল থেকে পরোটা ও সবজি কিনে আনেন। পরে সন্তানদের তা খাইয়ে স্কুলে পাঠান। তিনি আরও বলেন, আজ মাটির চুলায় রান্নার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের প্রকৌশল সেবার ব্যবস্থাপক মীর ফজলে রাব্বী বলেন, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় গ্যাস সঞ্চালন লাইনে ফাটল ধরায় কুমিল্লার ৯০ শতাংশ বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। ইপিজেডে গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ। আশা করছেন, কাল শুক্রবার নাগাদ গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, গতকাল থেকে গ্যাস নেই। খাবার নিয়ে ঝামেলায় আছেন। অফিসে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। হঠাৎ করে এমন ঝামেলায় তাঁর ব্যক্তিজীবনে ছন্দপতনে তিনি মহা বিরক্ত।
এদিকে গ্যাসসংকটে গতকাল থেকে কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) উৎপাদন বন্ধ আছে। ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, তিনি বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির মহাব্যবস্থাপকের সঙ্গে গ্যাসসংকট নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে গ্যাস লাইনে সমস্যা হওয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। সংস্কারকাজ শেষ হলে আজ বিকেলের মধ্যে ইপিজেডে গ্যাস সরবরাহ করা হবে।