বাবার বদলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন ছেলে

মাজহারুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-২ (বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও রানীশংকৈল উপজেলার আংশিক) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলাম। গতকাল রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন।

মনোনয়ন পেয়ে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিনের সংসদ সদস্য। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এখন তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাঁকে নিয়ে আমি মাঠে ছুটে বেড়িয়েছি। বাবার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই আমি দলের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। এলাকার ভোটাররা আমার পাশে আছেন। তাঁদের হাত ধরেই এই আসন প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে পারব।’

১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রার্থী হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দবিরুল ইসলাম প্রথম অংশ নেন। সেবার তিনি জিততে পারেননি। তবে দবিরুল ইসলামের দাবি, ওই নির্বাচনে তিনি জয়ী হলেও বিএনপির প্রার্থী মির্জা রুহুল আমিনকে জয়ী দেখানো হয়। প্রথমবার বাদে যতবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, ততবারই নির্বাচিত হয়েছেন দবিরুল। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে সিপিবি থেকে ১৫-দলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনেও জয়ী হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে জামায়াতের প্রার্থীকে পরাজিত করে সপ্তমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন দবিরুল।

দবিরুল ইসলাম

ঠাকুরগাঁও-২ আসনে দবিরুল ইসলাম ছাড়াও দলের মনোনয়ন চান তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলাম। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশাপাশি একটি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া দবিরুল ইসলামের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী ও তাঁর ছেলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আলী আসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি প্রবীর কুমার রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলম, দুই ভাই বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আহসান হাবিব ও আহসান উল্লাহ, মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর, ইসলামী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম, হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল হাসান, হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম শামীম ফেরদৌস মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

দলের মনোনয়ন ঘোষণার পর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আসলাম বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নে আমাদের হাত নেই। এলাকায় ফিরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব, আমি প্রার্থী হব কি না।’

এ বিষয়ে দবিরুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে সাতবারের জন্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। তাঁদের ভালোবাসা পেতে আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছি। কিন্তু শারীরিক কারণে এখন আর সেভাবে পারছিলাম না। আমার যেসব কাজ অসমাপ্ত রয়েছে, সেগুলো ছেলের মাধ্যমে শেষ করতে চাই। আমার বিশ্বাস, এলাকার মানুষ যেভাবে আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছেন, ছেলেকেও সেভাবে সমর্থন দেবেন।’