ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ফয়সাল খানের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে নয়টায় আঠারোবাড়ি-ঈশ্বরগঞ্জ সড়কের কাশিপুর এলাকায়
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ফয়সাল খানের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে নয়টায় আঠারোবাড়ি-ঈশ্বরগঞ্জ সড়কের কাশিপুর এলাকায়

ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানের পর তরুণের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবিতে মানববন্ধন

ময়মনসিংহে ফয়সাল খান ওরফে শুভ নামের এক তরুণকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর মৃত্যুর ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের কাশিপুর এলাকার ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারোবাড়ি সড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁর স্বজন ও এলাকাবাসী।

তাঁদের দাবি, ফয়সালকে ছাদ থেকে ফেলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। জেলার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানের পরপরই তাঁকে বাসার নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

ফয়সাল খান ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা কাশিপুর এলাকার মো. সেলিম খানের ছেলে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে নগরের কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউস রোডে বড় বোনের বাসায় থেকে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন।

মানববন্ধনে ফয়সালের ছোট ভাই নাজমুল খান বলেন, ‘আমার ভাইকে পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এটি পরিকল্পিত একটি হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ ফয়সালের বন্ধু সাইফ খান ও মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘পুলিশ এখনো কেন আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না? কেন গড়িমসি করা হচ্ছে? আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িত সবাইকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হোক।’

অন্যদিকে ফয়সালের প্রতিবেশী মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বাসায় অভিযানের সময় পুলিশ দোতলায় কথা বলছিল। কিন্তু দুই যুবক পাঁচতলায় উঠে ফয়সালকে নিচে ফেলে দেয়।’

ঘটনা প্রসঙ্গে ফয়সালের স্বজনেরা জানান, চার বছর ধরে ফয়সালের সঙ্গে একই এলাকার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি মেয়েটির সরকারি চাকরি হয়। এরপর অন্য আরেকজনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক হলে ফয়সালের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। ফয়সাল বিয়েতে বাধা দিতে চাইলে তরুণীর বাবা ১০ নভেম্বর পর্নোগ্রাফি আইনে থানা ও ডিবি পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ করেন। ওই দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফয়সালের বোনের বাসায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। পরে বোনের বাসার সামনে ফয়সালকে অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এলাকাবাসী ও প্রতিবেশীদের দাবি, ওই অভিযানের সময় তরুণীর এক খালাতো ভাই ও অজ্ঞাতপরিচয়ের আরেক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে যায় ডিবি। অভিযানে তাঁদের সঙ্গে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই অভিযান শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পর বাসার নিচ থেকে ফয়সালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁর বাবা সেলিম খান ১২ নভেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় তরুণীর বাবাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

ওই মামলার আসামিরা ঘটনার পর থেকে পলাতক বলে জানান কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আজ দুপুর পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।