অবৈধ দোকানপাট সরাতে নোটিশের পরও উঠছে নতুন স্থাপনা

অবৈধ দোকানপাট সরিয়ে নিতে তিন সপ্তাহ আগে তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।

জয়পুরহাটে অবৈধ স্থাপনা সরানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। গত শনিবার শহরের পাঁচুর মোড়ে

জয়পুরহাট শহরে পাঁচুর মোড়ে অবৈধ দোকানপাট সরিয়ে নিতে তিন সপ্তাহ আগে তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়ে নোটিশ টাঙিয়েছিল জেলা পরিষদ। তবে দোকানপাট না সরিয়ে উল্টো সেখানে নতুন করে দোকান নির্মাণ হচ্ছে। জেলা পরিষদের বেঁধে দেওয়া সেই তিন দিনের সময় যেন শেষই হচ্ছে না; আবার কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। গতকাল রোববারও সেখানে ওই নোটিশ টাঙানো ছিল।

জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচুর মোড়ে জেলা পরিষদের জায়গায় স্থায়ী দোকানপাট গড়ে উঠেছিল। সেখানে আলিশান নামে একটি হোটেল ছিল। এ কারণে জায়গাটি ভাঙা আলিশান নামে পরিচিত। পাঁচ-সাত বছর আগে আলিশান হোটেলসহ অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়। সেখানে স্বাধীনতা চত্বর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জেলা পরিষদ। দীর্ঘদিন ফাঁকা পড়ে থাকায় সেখানে অস্থায়ী দোকানপাট তৈরি করে অনেকে। স্বাধীনতা চত্বর নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করার পর সেখান থেকে দোকানপাট সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে স্বাধীনতা চত্বরের নির্মাণকাজ নানা জটিলতায় আটকে যায়। এরপর সেখানে আবারও অস্থায়ী দোকানপাট নির্মাণ করা হয়।

গতকাল রোববার পাঁচুর মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা আলিশানের ভেতরে সামান্য জায়গা ফাঁকা রয়েছে। বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে অস্থায়ী দোকান তৈরি করা হয়েছে। নতুন করে পূর্ব দিকে একটি দোকান নির্মাণের কাজ চলছে। ভাঙা আলিশানের পাঁচবিবি সড়কের অংশে একটি পান-সিগারেটের দোকানের পাশে দেয়ালে নোটিশ সাঁটানো। এ ছাড়া পূর্ব দিকের দেয়ালে একটি ও প্রধান সড়কের সামনে নোটিশ ঝোলানো হয়েছে। ওই তিনটি নোটিশে লেখা ‘এতদ্বারা জেলা পরিষদের পাঁচুর মোড়ে অবস্থিত অবৈধ দোকানমালিকদের সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে আগামী তিন দিনের মধ্যে সকল স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হলো অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আদেশক্রমে কতৃর্পক্ষ, জেলা পরিষদ, জয়পুরহাট।’

অস্থায়ী দোকানের মালিকেরা জানান, তাঁরা গরিব মানুষ। জায়গাটি ফাঁকা পড়েছিল। তাই অস্থায়ী দোকান করেছেন। এখানকার আয়ে তাঁদের সংসার চলে। স্বাধীনতা চত্বর নির্মাণ করা হবে শোনার পর তাঁরা দোকানপাট সরিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় তাঁরা আবার দোকান দিয়েছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁরা জেনেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্বাধীনতা চত্ত্বরের নির্মাণকাজ শুরু হবে না। এ কারণে তাঁরা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন। হঠাৎ করে তিন সপ্তাহ আগে জেলা পরিষদের লোকজন এসে তিন দিনের সময় বেঁধে দেওয়া কয়েটি নোটিশ টাঙিয়েছেন। তবে তাঁদের দোকান সরিয়ে নেওয়ার কোনো তাগাদা দেওয়া হয়নি।

মাছুম হোসেন নামের এক দোকানি বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে ভাঙা-গড়ার খেলার মধ্যে আছি। যদি আমাদের অন্য কোন স্থানে স্থায়ীভাবে বসার ব্যবস্থা করত, তাহলে স্বস্তি পেতাম।’

এ বিষয়ে জেলা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খাজা সামছুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচুর মোড়ে অবৈধ স্থাপনা অনেক আগেই উচ্ছেদ করা হয়েছে। তারপরও কিছু জায়গায় এখনো অবৈধ স্থাপনা রয়ে গেছে। সেই জায়গা খালি করা হবে। এই মোড়ে স্বাধীনতা চত্বর নির্মাণ করা হবে। এতে খরচ হবে ৫৫ লাখ টাকা। অনেক আগেই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। শহরের প্রধান সড়কে ফোর লেনের কাজ চলছে। এ কারণে স্বাধীনতা চত্বরের নির্মাণকাজ বিলম্বিত হচ্ছে। পাঁচুর মোড়ের অবস্থিত অবৈধ দোকানপাট সরিয়ে নিতে আবারও নোটিশ দেওয়া হয়েছে।