সিলেটের গোলাপগঞ্জে বিক্ষোভকারী এবং পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মোট পাঁচ জন নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, গোলাপগঞ্জের দত্তরাই গ্রামের মিনহাজ আহমদ (২৬), একই উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের নাজমুল ইসলাম (২২), সানি আহমদ (১৮), তাজ উদ্দিন (৪০) ও গৌছ উদ্দিন (২৯)।
নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করে আজ রাত সাড়ে আটটার দিকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত কারেও মৃত্যু হয়নি আজ। তবে গোলাপগঞ্জের একজন সংকটাপন্ন অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছেন। গৌছ উদ্দিনসহ আরও একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।
নিহত মিনহাজ গোলাপগঞ্জে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন এবং নাজমুল ঢাকা দক্ষিণ বাজারে একটি জুতার দোকানের ব্যবসায়ী ছিলেন।
আজ রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে গোলাপগঞ্জ চৌমহনী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন মিনহাজ আহমদ। পরে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ বাজারে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে বিক্ষোভকারী ছাত্র-জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন নাজমুল। এর আগে দুপুরে গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণে সানি আহমদ (১৮) ও তাজ উদ্দিন (৪০) নামের দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুদর্শন সেন।
মিনহাজ আহমদ নিহত হওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর বড় ভাই সাঈদ আহমদ। তিনি বলেন, বিকেলে ওয়ার্কশপ থেকে একটি হোটেলে ভাত খেতে বেরিয়েছিলেন মিনহাজ। সংঘর্ষের মধ্যে ওয়ার্কশপে ফিরতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে নাজমুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন।
এর আগে বেলা তিনটার দিকে গোলাপগঞ্জ চৌমহনা এলাকায় বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা সেখানে আসেন। পরে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন। হতাহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদুল আমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. সম্রাট তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, গোলাপগঞ্জে মারা যাওয়ার খবর তাঁরাও শুনেছেন। তবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। গোলাপগঞ্জে পুলিশও আক্রান্ত হয়েছে।