বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর শুরুর বাকি আছে এক মাস। এবার কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল আসরে ৩২টি দল খেলবে। বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের একটা বড় অংশ অবশ্য আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সমর্থক। প্রিয় দলের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে সমর্থকদের মধ্যে উন্মাদনার শেষ নেই। উন্মাদনার এমন একটা নিদর্শন পাওয়া গেল জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরদাদনা গ্রামে।
চরদাদনা গ্রামের দুই তরুণ মো. মিনহাজ ইসলাম ও শামীম হাসান ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে নিজেদের বাড়ি রাঙিয়েছেন। বাড়ি দুটি এখন আর্জেন্টিনার মেসি ও ব্রাজিলের নেইমারের বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মেসি ও নেইমারের বাড়ি দুটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ফুটবলপ্রেমীরা ভিড় করছেন।
মিনহাজ ব্রাজিলের সমর্থক। তিনি ইসলামপুরের সরকারি ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। চরদাদনা গ্রামের পল্লিচিকিৎসক আবদুর রাজ্জাকের ছেলে তিনি। মিনহাজের বাবাও ব্রাজিলের সমর্থক। অপরজন একই গ্রামের আর্জেন্টিনার সমর্থক শামীম হাসান। তিনি একই কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি মুদিদোকান চালান। তাঁর বাবা বাদশা মিয়া একজন কৃষক।
সম্প্রতি চরদাদনা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মিনহাজের পাকা বাড়ি রাঙানো ব্রাজিলের পতাকার আদলে। বাড়ির দেয়ালে নেইমারের ছবিও রং দিয়ে আঁকা হয়েছে। ইংরেজি ও বাংলায় দলের নাম ব্রাজিলও ডিজাইন করে আঁকা। এ বাড়ির পশ্চিম পাশে শামীমের টিনশেড বাড়ি। আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে পুরো বাড়িটি রং করা। টিনের বেড়ায় প্রিয় তারকা মেসির ছবি আঁকা।
উপজেলার ফকিরপাড়া থেকে ইজিবাইকে বাড়িটি দেখতে এসেছেন মুদিদোকানি মিজানুর রহমান। তিনি আর্জেন্টিনার সমর্থক। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা থাকলে আমরা সমর্থকেরা মিলে কত কিছুর আয়োজন করি! এবারও তেমন করব। তবে এবার তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শামীম হাসান। খুব সুন্দর করে প্রিয় দলের পতাকার রঙে রাঙানো হয়েছে।’
গাইবান্ধা বাজার থেকে রাফিউর রহমান নামের এক যুবক এসেছেন বাড়ি দুটি দেখতে। তিনি বলেন, ‘রীতিমতো আর্জেটিনা আর ব্রাজিলের বাড়ি বানিয়ে দুজন হইচই ফেলে দিয়েছেন। বাড়ি দুটি এখন চেনেন না, এমন কাউকে খুঁজে পাবেন না। সবাই বাড়ি দুটি দেখতে ভিড় করছেন।’
আর্জেন্টিনার সমর্থক শামীম হাসান বলেন, ‘ছোট থেকে ফুটবল খেলা দেখি। তখন থেকেই আর্জেন্টিনার ভক্ত। এ দলের প্রিয় খেলোয়াড় মেসি। দল ও প্রিয় খেলোয়াড়ের প্রতি ভালোবাসা থেকেই কাজটি করেছি। দোকানের আয়ের একটি অংশ দিয়ে বাড়িতে কাজ শুরু করি। প্রায় দেড় মাস সময় লেগেছে পুরো বাড়ি প্রিয় দলের পতাকার আদলে রাঙাতে। এটা করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।’
ব্রাজিলের সমর্থক মিনহাজ ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা ব্রাজিলের সমর্থক। ছোটবেলা থেকে বাবার সঙ্গে ব্রাজিলের খেলা দেখেছি। তখন থেকে আমি ব্রাজিলের সমর্থক। এ দলের প্রিয় খেলোয়াড় নেইমার। সামনে বিশ্বকাপ, দলের প্রতি ভালোবাসা থেকে এমনটা করেছি। পুরো কাজ শেষ করতে প্রায় দুই মাস সময় লেগেছে। সব মিলিয়ে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। পুরো টাকা বাবাই দিয়েছেন।’