এক ফ্রিল্যান্সারের কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দলের বিরুদ্ধে। বিষয়টি তদন্তে আজ শুক্রবার ডিবি পুলিশ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অভিযোগকারী আবু বকর সিদ্দিক একজন সরকার অনুমোদিত ফ্রিল্যান্সার। নগরের অক্সিজেন এলাকায় তাঁর বাসা।
আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার গুলবাগ আবাসিক এলাকার কয়লার ঘরে বারাকা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি কুলিং কর্নারে তিনি চা পান করছিলেন। এ সময় ডিবি পরিদর্শক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল তাঁকে এবং ফয়জুল আমিন ওরফে বেলাল নামের আরেক ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে নেন। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁদের মুঠোফোন ও টাকাপয়সা। একপর্যায়ে হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে তাঁর মুঠোফোনের লক খোলেন পুলিশের ওই সদস্যরা।
আবু বকর অভিযোগ করেন, ওই রাতে নগরের মনসুরাবাদে ডিবি হেফাজতে ছিলেন তিনি। এ সময় তাঁর মুঠোফোন ব্যবহার করে দুটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ লাখ করে ১০ লাখ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর করে গোয়েন্দা পুলিশের দলটি। এ ছাড়া তাঁর বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট (ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময়) থেকে ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার (প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সিএমপির অধ্যাদেশে মামলা করে আবু বকর ও ফয়জুল আমিনকে আদালতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। তাঁরা দুজন জরিমানা দিয়ে আদালত থেকে মুক্তি পান।
আবু বকর বলেন, বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানোর বিষয়টি জামিনে মুক্তির পর তিনি জানতে পারেন। আদালত থেকে বের হয়ে আরেকটি নতুন মুঠোফোন কিনে বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে থাকা ২ লাখ ৮২ হাজার ডলারের মধ্যে মাত্র ৫ হাজার ডলার রয়েছে। সোমবার রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে বাকি ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার সরিয়ে ফেলেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তিনি আরও বলেন, তাঁর কাছে যাবতীয় তথ্য–প্রমাণ রয়েছে। সঠিক তদন্ত না হলে তিনি মামলা করবেন।
অভিযোগের বিষয়ে নগর ডিবি পরিদর্শক রুহুল আমিনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি এই বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
জানতে চাইলে গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর-দক্ষিণ) মোছা. সাদিরা খাতুন আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। এর পরও যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, তাই এটি তদন্তের জন্য তথ্যপ্রযুক্তিতে অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’