টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথ

পর্যটকবাহী জাহাজ আবার চালুর দাবিতে টেকনাফে মানববন্ধন

টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দমদমিয়া বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জাহাজ ঘাট এলাকায়
ছবি : প্রথম আলো

টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল আবার শুরু করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় জাহাজ মালিক সমিতি, জাহাজ ঘাট সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সমিতি ও স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জাহাজ ঘাট এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জাহাজমালিকদের পক্ষে আটলান্টিক জাহাজের টেকনাফের ব্যবস্থাপক আবদুল আজিজ, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ঘাট ইজারাদার জিয়াউর রহমান, স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল গফফার, রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, রেজাউল করিম, মোহাম্মদ হামিদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ২০০৪ সাল থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথ দিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা জাহাজে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে আসতেন। কয়েক বছর ধরে এ নৌপথে ৮ থেকে ১০টি পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করত। গত ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে আয়োজিত এক সেমিনারে পর্যটনসচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন সেন্ট মার্টিন-টেকনাফ নৌপথে নাফনদীর নাব্যতা–সংকট ও একাধিক বালুচর জেগে ওঠার কথা বলে জাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে।

মানববন্ধনে বক্তারা প্রশ্ন করেন, যদি নাব্যতা–সংকট থাকত তাহলে সারা বছর এ নৌপথ দিয়ে মিয়ানমার থেকে কীভাবে পণ্যবোঝাই কার্গো ট্রলার ও বড় বড় জাহাজ টেকনাফ স্থলবন্দরে আসছে?

বক্তারা আরও বলেন, ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ ও মাদক পাচার প্রতিরোধে নাফনদীতে মাছ ধরা বন্ধ। এখন টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। তাহলে এখানকার মানুষগুলো কীভাবে আয়-রোজগার করবে? এখানকার আট শতাধিক পরিবারের কথা চিন্তা করে পুনরায় জাহাজ চলাচলে অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।

জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, সাধারণত প্রতিবছর অক্টোবর থেকে সেন্ট মার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়। এ বছরও সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জাহাজ চলাচলের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন জাহাজমালিকেরা। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে তাঁরা মৌসুমের প্রথম ১৪ দিন জাহাজ চালাতে পারেননি।

সূত্রটি আরও জানায়, টেকনাফ থেকে নাফ নদী হয়ে প্রতিবছর ৮ থেকে ১০টি পর্যটকবাহী জাহাজে প্রতিদিন সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করেন প্রায় ৮ থেকে ১৫ হাজার পর্যটক। টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন ও চট্টগ্রাম-সেন্ট মার্টিন—এ তিন নৌপথে ১২টি জাহাজ চলাচল করছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ চলাচল করত টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে। চলতি বছরের ৩১ মার্চ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সাগর উত্তাল ও কালবৈশাখীর আশঙ্কায় তিনটি নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম-সেন্ট মার্টিন রুটে আর কয়েক দিন পর জাহাজ চলাচল শুরু হবে।