ওসমানী মেডিকেল কলেজ

দুই ছাত্রকে হত্যাচেষ্টা ও এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে দুই মামলা

সিলেট মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন সহপাঠীরা। গতকাল সোমবার রাতে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেছে। অন্যদিকে গত শনিবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষানবিশ এক চিকিৎসককে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ এনে পৃথক আরেকটি মামলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে এ দুটি মামলা করা হয়। দুই মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। সিলেট কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইয়াসিন খান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কোতোয়ালি থানা–পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে হওয়া মামলার বাদী হয়েছেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফ। অভিযোগে একজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। দুই ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে হওয়া মামলার বাদী কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহমুদুল রশীদ। ওই মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সম্মেলনকক্ষে আজ বেলা দুইটার পর থেকে হাসপাতাল, পুলিশ প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতারা বৈঠকে বসেছেন। এতে উপস্থিত রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. মঈনুল হক, সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ প্রমুখ। বৈঠকে কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত আছেন।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ গেটের পাশে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র নাইমুর রহমান ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুদ্র নাথ। তাঁরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনার প্রতিবাদে আহত ছাত্রদের সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে গতকাল রাতে প্রায় চার ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। সে সঙ্গে হামলায় জড়িত ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন। এদিকে দুই ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরাও রাতে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। অবশ্য দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে হামলার ঘটনায় জড়িত দুজনকে আটকের পর জানানো হয়, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা জরুরি বিভাগ ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাসেবা চালু রাখবেন।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী অমিত হাসান বলেন, শনিবার হাসপাতালে শিক্ষানবিশ এক চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর স্বজন পরিচয়ে কয়েকজন তরুণ বাগ্‌বিতণ্ডা করেন। সে সময় ওই চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে ওই তরুণদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। এর জেরে গতকাল রাতে দুই ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।