কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কৃষককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাঁদের উদ্ধার করতে গিয়ে অপহরণকারীদের ছোড়া গুলিতে স্থানীয় তিন বাসিন্দা আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা অপহরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কম্বনিয়াপাড়া পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অপহৃত দুজন হলেন ওই এলাকার বাসিন্দা আবদুল মাবুদের ছেলে জাকির হোসেন (৪৫) ও ভুলু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ জহির (৫০)। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন মো. সোহেল (১৮), কায়সার উদ্দিন (২০) ও মো. সাকিব (১২)। তাঁদের চিকিৎসার জন্য উখিয়া ও কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আটক ব্যক্তির নাম মো. সাদ্দাম (২৭)। তিনিও একই এলাকার এজাহার মিয়ার ছেলে।
অপহরণ ও হতাহতের বিষয়টি টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অপহরণের ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জড়িত। তাঁদের গ্রেপ্তার করলে টেকনাফে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসা চক্রটির অন্যদের সম্পর্কেও জানা যাবে।
জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণের খবর পেয়ে হোয়াইক্যং ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তাসহ পুলিশের একটি দল পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে। অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরের বেশি সময়ে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৫০ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের মধ্যে ৯১ জন স্থানীয় বাসিন্দা, ৫৯ জন রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৭৮ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
টেকনাফ থানার তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত টেকনাফ থানায় অপহরণের মামলা হয়েছে ১৩টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৬০। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৫ জনকে।