প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন অনেকটা সুস্থ হলেও দুই চোখে এখনো ঝাপসা দেখছেন। আজ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর চোখের চিকিৎসা শুরু হয়েছে
প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন অনেকটা সুস্থ হলেও দুই চোখে এখনো ঝাপসা দেখছেন। আজ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর চোখের চিকিৎসা শুরু হয়েছে

সুস্থ হলেও চোখে ঝাপসা দেখছেন অপহৃত প্রার্থী, নতুন গ্রেপ্তার নেই

নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে অপহরণের শিকার সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন অনেকটা সুস্থ হলেও দুই চোখে এখনো ঝাপসা দেখছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁর চোখের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

এদিকে অপহরণের মামলায় এক আসামি জবানবন্দি দিয়ে ঘটনায় জড়িত অন্যদের নাম বললেও নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্তরা ঘটনার দিন থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। এ জন্য আসামিদের আটক করা যাচ্ছে না। তাঁদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

গত সোমবার বিকেলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করে একটি মাইক্রোবাসে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ঘণ্টাখানেক পর সিংড়ার সাঐল গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে থেকে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই দিন রাতে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রার্থীর ভাই মুজাহিদ হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে আছেন তাঁর সহোদর ও মামলার বাদী মুজাহিদ আলী। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই আগের চেয়ে ভালো আছেন। তবে দুই চোখে এখনো ঝাপসা দেখছেন। চোখের ওপর উপর্যুপরি ঘুষি মারায় চোখ ফুলে আছে ও তীব্র ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। আজ সকাল থেকে তাঁর চোখের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। চিকিৎসকেরা তাঁকে আরও কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন।

সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, প্রার্থীকে অপহরণ ও মারধরের মামলার পর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নাজমুল হক (বাবু) ও সুমন আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরদিন সন্ধ্যায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন সুমন। জবানবন্দিতে তিনি প্রতিপক্ষ প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের পক্ষ নিয়ে দেলোয়ারকে অপহরণের কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের নামও প্রকাশ করেন। কিন্তু গত চার দিনে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি সিসিটিভি ফুটেজে ১৩ জন দুর্বৃত্তের নাম-পরিচয় প্রকাশ্যে এলেও তাঁদের কেউ গ্রেপ্তার হননি। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত কালো হাইয়েস মাইক্রোবাসটির চালক ও মালিক শনাক্ত হলেও তাঁদের আটক বা মাইক্রোবাসটি জব্দ হয়নি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে। শনাক্ত আসামিরা ঘটনার দিন থেকে আত্মগোপন করেছেন। এ জন্য তাঁদের আটক করা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিও খুঁজছে পুলিশ। সন্ধান পাওয়ামাত্র সেটি জব্দ করা হবে।

জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল লতিফ শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগী প্রার্থীর ছেলে মুনয়েম হোসেন গতকাল ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে লুৎফুল হাবীবের মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে দরখাস্ত করেছেন। এ ব্যাপারে আগামী সপ্তাহে সিদ্ধান্ত জানাতে পারে কমিশন। তার আগে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বিষয়টি তাঁর (নির্বাচন কর্মকর্তা) কাছে পাঠানো হতে পারে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে অভিযুক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল বা জরিমানা করতে পারে।