আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে রাজনৈতিক দল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আজ সোমবার মহান বিজয় দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটি এখনো রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করিনি। আমরা একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ, যে উদ্যোগগুলো ২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের মধ্যে অনেকগুলো শক্তি মাঠে এসেছিল, যারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছিল এবং যারা বাংলাদেশকে নতুনভাবে সাজাতে চায়। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে একটি সুন্দর জায়গায় নিয়ে যেতে চায়। আগামীর বাংলাদেশকে সুন্দরভাবে স্বপ্নভূমি দক্ষিণ এশিয়া এবং বিশ্বমঞ্চে উপস্থাপন করতে চায়। সে জায়গা থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগামী এক–দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশে একটি সুন্দর দল উপহার দেবে।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান–পরবর্তী প্রথম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ সকালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওই ভাষণে তিনি ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায় বলে জানিয়েছেন। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আওয়ামী লীগের এবং ফ্যাসিবাদীর যারা দোসর রয়েছে, তাদের বিচারের আগে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ, একাত্তরের পরও যারা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, তাদের বিচার এখনো করতে পারিনি। নব্বইয়ে যারা জেহাদকে হত্যা করেছিল, তাদের বিচারও এখনো করতে পারিনি। নব্বই থেকে একাত্তর—আমাদের শিক্ষা, ২৪–এর বিচারের আগে বাংলাদেশের নির্বাচন হবে না।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, ‘২০২৪–এর বিচারের আগে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে দুই হাজার শহীদ এবং লাখ লাখ মানুষ, যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হবে। এ জন্য সব দল, মত, পক্ষ, গোষ্ঠীকে আমরা আহ্বান জানাব, আপনারা বিচারকার্যের জন্য সক্রিয় হন এবং বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ করুন।’
দিল্লির আগ্রাসন থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা বিজয় উদ্যাপন করছি ২০২৪–এ, সেটি হচ্ছে আওয়ামী এবং ফ্যাসিবাদমুক্ত দিবস, দিল্লির আগ্রাসনমুক্ত বিজয়। আমরা তরুণ প্রজন্মের কাছে আহ্বান রাখছি, যত দিন বাংলাদেশের এ ভৌগোলিক সীমানা-সার্বভৌমত্ব থাকবে, তত দিন পর্যন্ত তারা দিল্লীর আগ্রাসন থেকে এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখবে।’